বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৭২ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের শেষ দিনেও রাজধানীতে গণপরিবহন কম দেখা গেছে। অবরোধের দ্বিতীয় দিনের তুলনায় বেশি গণপরিবহন দেখা গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বাসের জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীদের। নির্দিষ্ট গন্তব্যে বাস পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে। ফলে ভোগান্তি দিয়েই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস শুরু হয়েছে নগরবাসীর। এ ছাড়া দূরপাল্লার গাড়িগুলো আজও ঢাকা ছাড়ছে না।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল পৌনে নয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় গণপরিবহন চললেও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। আগুন আতঙ্ক থেকেই গাড়ি কম চলছে বলে কয়েকজন বাসের চালক জানান।
রামপুরা এলাকায় আন্তনগর পরিবহনের বেশ কিছু বাস চলতে দেখা গেছে। তবে বাসের যাত্রী ও স্টাফদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সকাল সাতটার দিকে উত্তরা যাওয়ার জন্য রামপুরায় বাসে ওঠেন জাহিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “হঠাৎ উত্তরা যাওয়ার জরুরি প্রয়োজন হওয়ায় বাসে উঠলাম। মনে আগুন-আতঙ্ক কাজ করছে। সকালে তুলনামূলক পিকেটিং বেশি হওয়ায় এই আতঙ্কটা বেশি কাজ করছে।”
রাইদা পরিবহনের বাসচালক রায়হান বলেন, “আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় বাস কম। কারণ একটি বাস পুড়লে অনেক ক্ষতি হয়। তারপরও কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন।”
উত্তর বাড্ডা ফুটওভার ব্রিজের নিচে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন রিমা আক্তার। মহাখালী যাওয়ার জন্য সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, “অবরোধে নারীরা সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বাসের জন্য আছি। এই রুটে এমনিতেই বাস কম। তার ওপর আবার অবরোধ। মাঝেমধ্যে দু-একটি বাস এলেও সেখানে উঠতে পারছি না। মেয়েমানুষের দাঁড়াবার জায়গা নেই। একটু ফাঁকা কোনো গাড়ি আসবে সে অপেক্ষায় থাকলেও পাচ্ছি না।”
রাজধানীর কাকরাইল-পল্টন এলাকার অবস্থাও অনেকটা বুধবারের মতোই। ভিক্টর ক্ল্যাসিক, গাজীপুর পরিবহন, আজমেরীসহ এই রুটে চলা গাড়িগুলো কিছু সময় পরে পরে সড়কে দেখা যাচ্ছে। মাতুয়াইল এলাকাতেও বলার মতো গণপরিবহন চোখে পড়েনি।
নগরে কিছু পরিবহন চললেও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে না বললেই চলে। সকালে মহাখালী থেকে হাতে গোনা এক-দুইটা গাড়ি ঢাকার বাইরে যেতে দেখা গেছে।
টার্মিনালে এনা পরিবহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, প্রতিদিন অন্তত ১৫টির মতো গাড়ি ময়মনসিংহে গেলেও অবরোধের তিন দিনে চার থেকে পাঁচটি গাড়ি ছেড়েছে।
অবরোধের কারণে আজও অনেকটা ফাঁকা মহাখালীর মূল টার্মিনালের বাইরের এলাকা। নগরে চলা গাড়িও খুব কম দেখা গেছে সড়কে। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়বে এমন প্রত্যাশা পরিবহন শ্রমিকদের।