• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকার ১৮ ওয়ার্ড


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকার ১৮ ওয়ার্ড
এডিস মশা। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে এডিস মশার লার্ভা নিয়ে জরিপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরিপে বহুতল ভবনে সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এছাড়া স্বতন্ত্র বাড়িতে ২২ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবনে ২২ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়িতে ১৩ শতাংশ ও খালি জায়গায় মিলেছে ১৪ শতাংশ। এরমধ্যে দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভবনে মৌসুম পূর্ববর্তী এডিস সার্ভের ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। ফলাফল তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ দাউদ আদনান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ১৭-২৬ এপ্রিল ১০ দিনব্যাপী ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব ও প্রজনন স্থান নিরীক্ষার জন্য দুই সিটির ৩ হাজার ১৫২টি বাড়িতে জরিপ চালানে হয়। এর মধ্যে ৪৬৩টিতে এডিসের লার্ভা ও পিউপা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ শতকরা প্রায় ১৫ শতাংশ। যা মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স আদর্শের জন্য অনেক বেশি এবং উদ্বেগের।

এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত। সাধারণত এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি ‘ব্রুটো ইনডেক্স’র মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ১০ শতাংশের বেশি হওয়া মানেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

জরিপে ঢাকার দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটির ৩, ৪, ৫, ১৩, ১৫, ১৭, ১৬, ২৩, ৫২ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড। অন্যদিকে উত্তর সিটির ১২, ১৩, ১৭, ২০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রতি বছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মৌসুম পূর্ব, মৌসুম, মৌসুম পরবর্তী তিনটি জরিপ কাজ পরিচালনা করে থাকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ১২ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ১৩ এবং ২০ নং ওয়ার্ড, এগুলোতে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪০ শতাংশ। ৩৬ নং ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৩১ ও ৩২ নং ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ, ১৭ এবং ৩৩ নং ওয়ার্ডে ২৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।

এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ঢাকার সবচেয়ে বেশি, ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৪ নং ওয়ার্ডে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ৫২ ও ৫৪ নং ওয়ার্ডে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ১৬ নং ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। এছাড়াও ৩ নং, ৫ নং, ১৫ নং, ১৭ নং এবং ২৩ নং ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯৯টি ওয়ার্ডে ২১টি টিমের মাধ্যমে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতি ওয়ার্ড ৮টি ব্লকে ভাগ করে দুটি টিম ৪টি ব্লকে ১৫টি করে প্রতি ওয়ার্ডে ৩০টি করে বাড়ি জরিপ পরিচালনা করে। ১০ দিনে ৯৯ টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ৩ হাজার ১৫২টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। যেসব ওয়ার্ডে বাড়ির সংখ্যা ও এলাকা বড় সেগুলো ৩/৫টি টিমের মাধ্যমে জরিপ পরিচালনা করা হয়।

জরিপ করা ৩ হাজার ১৫২ বাড়ির মধ্যে ৪৬৩ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বহুতল ভবন ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, স্বতন্ত্র বাড়ি ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবন ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়ি ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও খালি জায়গা ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

ঢাকা উত্তর সিটিতে মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং হাউস ইনডেক্স ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়াও দক্ষিণ সিটিতে মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং হাউস ইনডেক্স ১৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

Link copied!