বছরের শেষ দিনের সূর্যাস্ত উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটকের সমাগম হয়েছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সৈকতে বসে বছরের শেষ বিকেল কাটান। পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কেন্দ্র ছিল কুয়াকাটার অনন্য সূর্যাস্ত।
লাল-কমলা আভায় রাঙানো আকাশ ও সাগরের মিলন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত ছিলেন ভ্রমণপিপাসুরা। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকেই সমুদ্রসৈকতের জিরো পয়েন্ট, লেম্বুর বন ও আশপাশের এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন আশানুরূপ পর্যটক না হলেও হতাশ নয় তারা।
যশোর থেকে আসা পর্যটক সিয়াম বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে কুয়াকাটায় এসেছি থার্টি ফার্স্ট নাইট উপভোগের জন্য। সূর্যোদয় কুয়াশার কারণে দেখতে না পেলেও সূর্যাস্ত একদম স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি। কুয়াকাটা আসা সার্থক হয়েছে।’
কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক রেশমা বলেন, ‘প্রতি বছর থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন নগরীগুলোতে গিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করে থাকি, তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর কুয়াকাটায় আসলাম এবং বছরের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ করলাম। তবে ভালো লাগতো আজ রাতে নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে উৎসব করতে পারলে কিন্তু সেটি করার সুযোগ নেই। কারণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক চলছে।’
এদিকে পর্যটকদের আগমনে ব্যস্ত সময় পার করছে হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। হোটেল মালিকরা জানান, অধিকাংশ আবাসিক হোটেল গুলো ৫০ শতাংশের বেশি বুকিং হয়ে যায়। খাবারের দোকান, হস্তশিল্প ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও ভালো বিক্রির আশা করছেন। তবে শতভাগ পর্যটক না হওয়ার কথাও জানান অনেক ব্যবসায়ী।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কুয়াকাটায় আশানুরূপ পর্যটক থাকবে। তবে আশানুরূপ পর্যটক না হলেও ৬০ শতাংশ পর্যটক রয়েছে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘পুরান বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতি বছরই পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নামে। কিন্তু এবছরের চিত্র কিছুটা ভিন্ন, এর কারণ হতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর কারণে কিছু পর্যটক কম হয়েছে। তবে সামনের দিকে আশা করছি কুয়াকাটায় আরও বেশি পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে।’
এ বিষয়ে টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন, লাইফগার্ড টিম প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়াও সাদা পোশাকেও একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। সর্বোপরি কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।’





























