• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২,

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে মারধরের শিকার সেই রিকশাচালককে অব্যাহতির সুপারিশ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে মারধরের শিকার সেই রিকশাচালককে অব্যাহতির সুপারিশ

শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২-নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর গ্রেপ্তার রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশ।

সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক তৌহিদুর রহমান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই সুপারিশ করে অন্তর্বর্তী বা অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে এবং বিস্তারিত তদন্ত করে রিকশাচালক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সুনিদিষ্ট ও নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ অবস্থায় তাকে আপাতত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৭৩ (এ) ধারায় অব্যাহতি দেওয়া সমীচীন এবং ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে পার্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের সময় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ আগস্ট বিশেষ দিনে ধানমন্ডি মডেল থানার ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গেলে স্থানীয় জনগণের রোষানলে পড়ে গণপিটুনির শিকার হন আজিজুর রহমান। পরে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নেয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা ও গোপন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হয়, আজিজুর রহমান আগের একটি অস্ত্র মামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। থানায় নেওয়ার পর তার আচরণ 'সাধারণ রিকশাচালকের মতো মনে হয়নি' এবং 'নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য বা তাদের সোর্স' হতে পারেন বলে ধারণা করা হয়।

ওইদিন আজিজুরের নেওয়া ফুলের তোড়ায় লেখা ছিল '১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবেসে সাধারণ রিকশাওয়ালা হিসেবে সৎ উপার্জনের টাকা দিয়ে ফুল কিনেছি। আমি কোনো দল করি না, শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি।'

ফলে স্থানীয় লোকজনসহ সোর্সের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয় যে তিনি এই মামলার ঘটনায় জড়িত রয়েছেন, যা মামলার তদন্তের স্বার্থে আরও যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।

এ অবস্থায় মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং আজিজুর রহমানকে এই মামলার ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে মর্মে কিছু তথ্য থাকায় তাকে সন্ধিগ্ধ হিসেবে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওইদিন রিকশাচালক আজিজুর বলেন, 'আমি কোনো দল করি না। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। তাই এখানে এসেছিলাম।'

তিনি বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আসিনি। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। তাই আমার হালাল টাকা দিয়ে কেনা ফুল নিয়ে এসেছি।'

এরপর আজিজুরকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ঝড় ওঠে। কারাগারে পাঠানোর একদিন পরই সমালোচনার মুখে জামিন পান তিনি।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানার নিউমার্কেট থেকে সাইন্সল্যাব এলাকায় মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম।

ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিরা গুলি, পেট্রোলবোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। সেই গুলি ভুক্তভোগীর পিঠ দিয়ে ঢুকে যায় এবং তিনি তাৎক্ষণিক পড়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ২মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন আরিফুল।

এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন তিনি। 

Link copied!