গত জুলাইয়ের শেষ দিকে সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে ২৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এতে বলা হয়, কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ থেকে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে। ইতোপূর্বে ১ থেকে ১৫ অক্টোবর সাধারণ নাগরিক, সরকারি চাকরিজীবী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অ্যাসোসিয়েশন বা সমিতি এই চার শ্রেণিতে প্রশ্নমালার মাধ্যমে কমিশন অনলাইনে সর্বসাধারণের মতামত সংগ্রহ করেছে।
এদিকে নতুন পে-স্কেলের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৫ পৃষ্ঠার একটি ‘সুপারিশপত্র’ ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া সুপারিশে চাকরিজীবীদের গ্রেড ২০টিই রাখা হয়েছে। তবে এ সুপারিশেকে ভুয়া বলে জানিয়েছে পে কমিশন। ফেসবুকে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া ওই নথিতে বিভিন্ন গ্রেডের বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট কাঠামো ও ভাতা সংশোধনের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা কমিশনের অনুমোদিত কোনো নথি নয় বলে জানিয়েছে কমিশন।
কমিশন জানিয়েছে, বেতন স্কেলের খসড়া সুপারিশ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কোথাও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি, আবার কোনো নথি প্রকাশ বা ফাঁসও করা হয়নি। অথচ ফেসবুকে প্রচারিত নথিতে কমিশনের নাম-লোগো ব্যবহার করে বিভিন্ন গ্রেডে বেতন বাড়ানোর বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাধারণ সরকারি চাকরিজীবীদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আলী খান বলেন, ‘যে ১৫ পৃষ্ঠার সুপারিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে, সেটি কমিশনের তৈরি নয়। এমন কোনো নথি আমাদের কাছে নেই। এটি ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর।’
তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট তৈরির কাজ করছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডারদের মতামত নেওয়া বাকি আছে। আগামী সোমবার কমিশনের সঙ্গে সচিবদের সভা রয়েছে। ফলে যে সুপারিশ ছড়িয়ে পড়েছে সেটি ভুয়া।’
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন সরকার এলে এটি বাস্তবায়ন করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা। উপদেষ্টার এমন মন্তব্য ভালোভাবে নেননি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা চাইছেন, বর্তমান সরকারই এটি বাস্তবায়ন করুক। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন তারা। ফলে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জটিলতাও তৈরি হয়েছে। যদিও বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারই উদ্যোগ নিয়ে পে কমিশন গঠন করায় তাদেরও সদিচ্ছার ঘাটতি নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
































