• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

ইলা মিত্রের জন্মশতবার্ষিকী আজ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
ইলা মিত্রের জন্মশতবার্ষিকী আজ
ইলা মিত্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলের ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের বিপ্লবী নেত্রী ইলা মিত্রের জন্মশতবার্ষিকী আজ শনিবার। দিনটি উপলক্ষে স্থানীয় একটি সংগঠন কর্মসূচি পালন করবে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে নেই কোনো আয়োজন। এমনকি ইলা মিত্র নাচোলের যেসব গ্রামের সাঁওতাল আদিবাসীদের নিয়ে তেভাগা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন, তাদের স্মৃতিও সংরক্ষণ করা হয়নি।

স্বজনদের আক্ষেপ, এমন বড় একটি আন্দোলন যে হয়েছিল, তার কোনো নামনিশানাই পাওয়া যাবে না নাচোলে। এই সংগ্রামীদের স্মরণ ও স্মৃতি সংরক্ষণে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

সংগ্রামী কৃষক নেতা ইলা মিত্র ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশব থেকে তার বেড়ে ওঠা ঝিনাইদহের শৈলকূপার বাগুটিয়া রায়পাড়া গ্রামে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনেই ইলা মিত্র কমিউনিস্ট আদর্শের সংস্পর্শে এসেছিলেন।

নাচোলের রাণী ইলা মিত্রর বাবা নগেন্দ্রনাথ সেন ও মা মনোরমা সেন দু'জনের বাড়িই ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে। বাবার চাকরির সুবাদে ইলা সেনের জন্ম হয় কলকাতায়। তবে বিবাহসূত্রে ১৯৪৫ সালে তিনি চলে আসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রামচন্দ্রপুরে। সে সময় জমিদারি উচ্ছেদ, জোতদারী, শোষণ ও খাদ্য আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন। ইলা মিত্রের বাবা নগেন্দ্রনাথ সেন ছিলেন অবিভক্ত বাংলার ডেপুটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল।

১৯৪৫ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জমিদারপুত্র দেশকর্মী কমিউনিস্ট রমেন্দ্র মিত্রের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর দেখানো পথেই তিনি যোগ দেন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের এক-তৃতীয়াংশ আদায় করার অন্দোলনে (তেভাগা আন্দোলন) নেতৃত্ব দেন তিনি। হয়ে উঠেন সবার রাণীমা। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তেভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ইলা মিত্র ও রমেন মিত্র।

১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি সাঁওতাল বেশ ধারণ করে ভারতে পালাবার সময় ইলা মিত্রকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তান পুলিশ। কারাগারে তার ওপর চলে পাশবিক নির্যাতন। এরপরও আদালতে নির্ভীক চিত্তে ঐতিহাসিক জবানবন্দি দেন এ কিংবদন্তি।

কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন পুলিশ নিহত হওয়ায় ইলা মিত্রসহ ২৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার ইলা মিত্রকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে কলকাতা যাবার অনুমতি দেয়। এরপর আর পূর্ব বাংলায় ফিরে আসতে পারেননি ইলা মিত্র। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে তিনি ভারতে ও বিশ্ব পরিসরে জনমত সংগঠিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৩ অক্টোবর ২০০২ সালে ৭৭ বছর বয়সে ইলা মিত্রের দেহাবসান ঘটে।

Link copied!