ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী হতে আগ্রহীদের জন্য শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন (ইসি) রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ সম্পন্ন করেছে এবং মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময়সূচিও নির্ধারণ করেছে।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীরা ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন।
মনোনয়নপত্রের দাম কত
মনোনয়নপত্র নিতে আলাদা কোনো ফি নেই। তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোটার তালিকার সিডি কিনতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য এবং ইউনিয়ন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের (যদি থাকে) জন্য ৫০০ টাকা হারে ট্রেজারি চালান বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ জমা দিতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি
- নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী—
- মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন: ২৯ ডিসেম্বর
- মনোনয়নপত্র বাছাই: ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি
- বাছাই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল: ৫–১১ জানুয়ারি
- আপিল নিষ্পত্তি: ১২–১৮ জানুয়ারি
- প্রার্থিতা প্রত্যাহার: ২০ জানুয়ারি
- প্রতীক বরাদ্দ: ২১ জানুয়ারি
- ভোটগ্রহণ: ১২ ফেব্রুয়ারি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই তফসিল ঘোষণা করেন।
কোথা থেকে মনোনয়নপত্র পাওয়া যাবে
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। অফিস চলাকালীন সময়—সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, সরকারি ছুটির দিনসহ—মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ করা হবে।
প্রার্থী নিজে, প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী সরাসরি উপস্থিত থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।
কারা প্রার্থী হতে পারবেন না
সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী এবার প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতায় কিছু কঠোরতা যুক্ত করা হয়েছে। ফেরারি বা পলাতক আসামি হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না। পাশাপাশি মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে সব ধরনের ঋণ ও সরকারি বিল পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অযোগ্য বিবেচিত হবেন যারা—
- আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি ঘোষিত
- প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে বহাল
- ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বা কিস্তি খেলাপি
- বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি বা টেলিফোন বিল বকেয়া
- কোম্পানির পরিচালক বা অংশীদার হয়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ
প্রত্যেক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সর্বশেষ কর বছরের আয়কর রিটার্নের কপি সংযুক্ত করে হলফনামা দিতে হবে।
লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তিদের জন্য শর্ত
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তি এবং সিটি করপোরেশন মেয়র, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে আগেই পদত্যাগ করতে হবে।
একজন ব্যক্তি একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন। এর বেশি হলে সব মনোনয়ন বাতিল হবে।
নির্বাচনি ব্যয় ও ব্যাংক হিসাব
এবার ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করেছে ইসি। অর্থাৎ আড়াই লাখ বা কম ভোটারের এলাকায় প্রার্থী সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। বেশি ভোটার হলে ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে ব্যয়ের সীমা বাড়বে।
নির্বাচনি ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত ব্যাংকে আলাদা হিসাব খুলতে হবে এবং সব ব্যয় ওই হিসাবের মাধ্যমেই পরিচালনা করতে হবে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ব্যয়ের সম্ভাব্য উৎস, সম্পদ ও দায়-দেনার বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক।
ভোটার তালিকার ব্যবহার
ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ছবিসহ ভোটার তালিকা ব্যবহার করবেন। তবে প্রার্থী ও তার এজেন্টরা ছবিছাড়া ভোটার তালিকা ব্যবহার করবেন, যা সিডি আকারে সংগ্রহ করে মুদ্রণ করতে হবে।






























