ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি একটি শোরুমে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন মোটরসাইকেলটির নথিভুক্ত মালিক মো. আব্দুল হান্নান।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে ঢাকার মহানগর হাকিম দিদারুল আলমের আদালতে এ কথা বলেন তিনি।
আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমি হোন্ডা মোটরসাইকেলটি মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছিলাম। পরে হাতে সমস্যা হওয়ায় পরিবার থেকে বাইক চালাতে নিষেধ করা হয়। তাই বাসায় পড়েছিল। নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে একটি শোরুমে বিক্রি করি এবং নাম পরিবর্তন করে দেবো বলেছিলাম।’
হান্নান জানান, শোরুম কর্তৃপক্ষ দুই মাস আগে মালিকানা পরিবর্তনের জন্য ফোন দিয়েছিল। তবে অসুস্থ থাকার কারণে তিনি যেতে পারেননি।
শুনানিকালে হান্নান আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ‘গ্রেফতারের পর র্যাবকে বলেছিলাম শোরুমে নিয়ে গেলে সব বেরিয়ে আসবে। থানাতেও বলেছি। তদন্ত করেন, সত্য বেরিয়ে যাবে।’ তখন বিচারক তাকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন।
পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক সামিম হাসান রিমান্ড আবেদনে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, পলাতক আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতার, ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং অর্থ ও তথ্যের যোগসূত্র নির্ণয়ের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, মোটরসাইকেলটির নম্বর যাচাই করে দেখা গেছে, এর মালিক হান্নান। গ্রেফতারের পর থেকে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে অসংলগ্ন তথ্য দিচ্ছেন।
মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে বলেন, হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত হোন্ডা মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে রিমান্ড প্রয়োজন।
এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পল্টন থানার উপপরিদর্শক সামিম হাসান প্রথমে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। পরে আরেক আবেদনে চারটি কারণ উল্লেখ করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তথ্যমতে, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, শরিফ ওসমান হাদি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চলার সময় অজ্ঞাতনামা দুই সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে এসে তাকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে র্যাব-২ জানতে পারে, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা-মেট্রো-ল-৫৪-৬৩৭৫। পরে বিআরটিএ থেকে মালিকানা যাচাই করে মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে মো. আব্দুল হান্নানকে শনাক্ত করা হয়।































