স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “তামাকের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনে মোটামুটি সফল হয়েছি। এখন প্রকাশ্যে কেউ ধূমপান করে না, সেই দৃশ্যটাও আমরা দেখছি। তামাক যে ক্ষতিকর সেটা মানুষজন জেনে গেছে। সে কারণে অনেকেই তামাক থেকে ফিরে সাধারণ জীবনযাপন করছে।”
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র ওয়েসিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। পুলিশ বাহিনীর প্রচেষ্টায় আমরা সেটা সফল হয়েছি। সেই যুদ্ধেই আজ আমরা অবতীর্ণ। এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা রক্ষা করতে পারবো না।”
মন্ত্রী বলেন, “এলাকার যারা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাদের প্রতি আহ্বান, আপনারা সবাইকে উদ্ভুদ্ধ করুন, জানান। এটা যদি আমরা কন্ট্রোল করতে না পারি তাহলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে। আমরা ২০৪১-এ যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সেখানে হোঁচট খাবো।”
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দেওয়া এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সবাইকে এখানে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদক থেকে সবাইকে বিরত রাখতে হবে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের জানাতে হবে। আইজি সাহেব বলেছেন, মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয় না। এমনকি ফেনসিডিলও আমরা তৈরি করতে দেয় না।”
এছাড়া মাদকের ভয়াবহতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “হেরোইন-ইয়াবার পর এখন এসেছে ভয়ানক মাদক এলএসডি। এলএসডি যে কতটা ভয়ানক তা আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র নিজের গলা নিজে কাটতে গিয়েছিল, সেই দৃশ্যও আপনারা দেখেছেন। আপনাদের ঐশীর কথাও মনে আছে। সন্তান যখন মাদকাসক্ত হয় আপনারা তখন প্রকাশ করতে চান না। ভাবেন সমাজের মানুষ কী বলবে। যখন আপনার সন্তান মাদকাসক্ত হয়, তখন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন।”
আসাদুজ্জামান খান বলেন, “আমাদের দেশে ৮০ লাখ লোক মাদকাসক্ত। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে আমাদের সরকারি একটি মাদক নিরাময় হাসপাতাল রয়েছে। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনি নিজে একবার এ হাসপাতাল দেখতে যাবেন। আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এটা নিয়ন্ত্রণ করেন। এ হাসপাতালে অনেক কিছু নেই, অনেক সমস্যা। তারপরও হাসপাতালটি চলছে।”
এদিকে দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার বেশি লোক রয়েছে। এর বেশিরভাগ শুধুমাত্র মাদক মামলার আসামি বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আজিজুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।