• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নাটক বন্ধের সময় ‘হামলার’ কথা মনে হচ্ছিল শিল্পকলার ডিজির


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৬:০৩ পিএম
নাটক বন্ধের সময় ‘হামলার’ কথা মনে হচ্ছিল শিল্পকলার ডিজির
সৈয়দ জামিল আহমেদ। ফাইল ফটো

বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদের মুখে প্রদর্শনীর সময় হঠাৎ নাটক বন্ধের নির্দেশ দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ প্রসঙ্গে কথা বলেন সৈয়দ জামিল আহমেদ।

সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ২২ জায়গায় শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা হয়েছে। সেসব মাথায় ছিল। আর এখানে ভেতরে দর্শক ছিল। উত্তেজিত কেউ গিয়ে যদি দর্শকদেরও আক্রমণ করে বসে; দর্শকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা প্রদর্শনী বন্ধ করি। আমি ভেতরে গিয়ে দর্শকের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।”

ঘটনার বিবরণ জানিয়ে শিল্পকলার ডিজি বলেন, “শিল্পকলার আয়োজনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে যাত্রা উৎসব চলছে। আমি এবং নাট্যকলা বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির সেখানে ছিলাম। নাট্যশালার সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে শুনে আমি যাই। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলি। তারা বলেন, এহসানুল আজিজ বাবু স্বৈরাচারের দোসর। তার নাট্যদলের প্রদর্শনী করতে দেবেন না। প্রথমে তারা মেনে নেন; আমরা নাটকের প্রদর্শনী শুরু করতে বলি। কিন্তু পরে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন; তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।”

সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “শিল্পকলা একাডেমি আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আমি এটাও বলেছি, আমার বুকের ওপর দিয়ে যান। তখন আমাকে পাশ কাটিয়ে দেয়াল টপকে কয়েকজন ঢুকে পড়েন। যখন গেট ভেঙে ফেলেন, তখন আমরা দেশ নাটকের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রদর্শনী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেই।”

এ ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কেন নেওয়া হলো না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জামিল আহমেদ বলেন, “মাত্র কিছুদিন আগেই গুলি চলেছে। আমরা আর দমন–পীড়ন চাইনি। সেখানে বিক্ষোভ করতে যারা এসেছিলেন, তাদের মধ্যেও দুইজন ছিলেন জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ।”

শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করলেও তাদের সহযোগিতা কেন নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্নে তুলে জামিল আহমেদ। তিনি বলেন, “বলপ্রয়োগে থামাবেন? নাকি কথা দিয়ে থামাবেন? এখানে যারা এসেছেন, তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের কষ্টের কথা বলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে দাঁড় করিয়ে দেওয়াটা কি ঠিক ছিল? আমি মনে করেছি, এটা সেনাবাহিনীর জায়গা নয়।”

জামিল আহমেদ বলেন, “আমি সেনাবাহিনীকে জনতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে চাইনি। শেষের দিকে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা সেখানে এসেছিলেন এবং সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িও এসেছিল।”

সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় নয়, জনগণের আন্তরিক চেষ্টায় একটি জনবান্ধব শিল্পকলা একাডেমি গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক। তিনি বলেন, “গতকাল আমি একটা খণ্ডযুদ্ধ করেছি। অনেক চেষ্টা করেছি, নাটকের প্রদর্শনী যেন হয়। কিন্তু আমি হেরে গেছি। একটা খণ্ডযুদ্ধে হেরে গেছি। কিন্তু মূল যুদ্ধটায় এখনো হারিনি।”

এর আগে শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নাট্যদল দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনীতে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের নাটকটি শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তথ্য : ঢাকা ট্রিবিউন।

সাহিত্য-সংস্কৃতি বিভাগের আরো খবর

Link copied!