• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
সেরা খাবার ২০২১

২০২১ সালে বিশ্বের সেরা শেফ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১, ০৬:২০ পিএম
২০২১ সালে বিশ্বের সেরা শেফ

‘মিশেলিন স্টার’ নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক রন্ধনশিল্পের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মান। এটি ‘রন্ধন জগতের অস্কার’ হিসেবেও পরিচিত। এই স্টার বিশ্বের শেফ বা রন্ধনশিল্পীদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করেন। একটি স্টার প্রাপ্তির অপেক্ষা থাকেন তারা। প্রতিবছরই বিশ্বজুড়ে বাছাই করা হয় সেরা শেফকে। যারা তাদের রেসিপি দিয়ে চমৎকারিত্ব দেখিয়েছেন। ডাইনিং টেবিলে ঝড় তুলেছেন। সেই অনুযায়ী বছরের সেরা রন্ধনশিল্পী হওয়ার খেতাবও পেয়েছেন। ‘মিশেলিন স্টার’ প্রাপ্তির তালিকা অনুযায়ী, বছরের সেরা ১০ রন্ধনশিল্পী নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন।

অ্যালাইন ডুকাস
অ্যালাইন ডুকাস বিশ্বের অন্যতম সেরা শেফ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বজুড়ে ৩৬টি রেস্তোরাঁয় তিনি ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন। ক্যারিয়ারজুড়ে তিনি ২১টি মিশেলিন তারকা ধারণ করেছেন। বিশ্বমানের ফরাসি খাবারের জন্য পরিচিত অ্যালাইন ডুকাসে। এ ছাড়া  ডুকাসই একমাত্র শেফ, যিনি তার খাবার মহাকাশে পাঠিয়েছেন। ২০১৫ সালে ডুকাসে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৃথিবী প্রদক্ষিণকারী মহাকাশচারীদের কাছে নিজের বানানো খাবার পাঠান।

পিয়েরে গ্যাগনায়ার 
বিখ্যাত ফরাসি শেফ পিয়েরে গ্যাগনেয়ার। রন্ধন জগতে তার ৪০ বছরের ক্যারিয়ার। মাত্র ২৬  বছর বয়সে তিনি প্রথম মিশেলিন স্টার পান। তারপর থেকে আর থামেননি। তিনি ক্ল্যাসিক ফরাসি রান্নার নিয়মগুলো ভেঙে নতুন খাবার তৈরির জন্য বিখ্যাত। প্যারিসের রু বালজাকের গ্যাগনায়ারের নামী ফ্ল্যাগশিপ রেস্তোরাঁটি দুই দশকের বেশি সময় ধরে জনপ্রিয়, যা রন্ধন জগতের একটি সত্যিকারের কীর্তি। বর্তমানে তিনি লন্ডনের স্কেচসহ বিশ্বের ১৮টি গ্যাস্ট্রোনমিক রেস্তোরাঁর তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

মার্টিন বেরাসতেগুই 
বিশ্বের তৃতীয় সর্বাধিক সেরা শেফ মার্টিন বেরাসতেগুই। বর্তমানে তার কাছে ১২টি মিশেলিন স্টার রয়েছে। ২৫ বছর বয়সে প্রথম মিশেলিন স্টার পান। তার প্রথম রেস্তোরাঁ ‘মার্টিন বেরাসতেগুই’ বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বিখ্যাত রেস্তোরাঁটি ২০০১ সালে তৃতীয় মিশেলিন স্টার পুরস্কৃত হয়, যা পরের ৬ বছর ধরে বিশ্বের ৫০টি সেরা রেস্টুরেন্টের তালিকায় রয়েছে। ৪৪ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি টেনেরিফ ও বার্সেলোনায় ৩টি মিশেলিন-স্টার রেস্তোরাঁ খুলেছেন।  এ ছাড়া তিনি ডোমিনিকান রিপাবলিক, মেক্সিকো, কোস্টারিকাসহ বিশ্বজুড়ে আরও ৬টি রেস্তোরাঁর মালিক। তাকে ঐতিহ্যবাহী বাস্ক খাবারের জগতে একজন কিংবদন্তি এবং বিশ্বের শীর্ষ শেফদের একজন বলে মনে করা হয়।

ইয়ানিক অ্যালেনো
ইয়ানিক অ্যালেনো সারা বিশ্বে ১৮টি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেন। তার পরিচালিত ‘অ্যালেনো প্যারিস আউ প্যাভিলন লেডোয়েন’ প্যারিসের প্রাচীনতম রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে একটি, যা চ্যাম্পস এলিসিস বাগানে অবস্থিত। ফরাসি এই শেফ ২০১৩ সাল থেকে রন্ধনপ্রণালির ওপর গবেষণাও চালিয়ে যাচ্ছেন।

অ্যান-সোফি পিক
অ্যান-সোফি পিক হলেন সবচেয়ে মিশেলিন স্টার পাওয়া নারী রন্ধনশিল্পী। তার ৫টি রেস্তোরাঁজুড়ে ৮টি স্টার রয়েছে। ১৯৯৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি তার পরিবারের রেস্তোরাঁ মেসন পিকের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ফরাসি এই শেফের রন্ধনসম্পর্কীয় কোনো আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছিল না। কিন্তু পরে রেস্তোঁরাটির জন্য ৩ তারকা অর্জন করেন পিক। এরপর দ্বিতীয় রেস্তোরাঁ অ্যান-সোফি পিক খোলেন।

গর্ডন রামসে 
শেফ গর্ডন রামসে, বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শেফদের একজন। তার রান্না অস্থির কৌশল এবং ব্যতিক্রমী ব্রিটিশ খাবারের জন্য পরিচিত। গর্ডন রামসে যুক্তিযুক্তভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শেফ। যদিও তিনি তার ক্যারিয়ারজুড়ে ১৬টি মিশেলিন স্টার পেয়েছেন। বর্তমানে তার রয়েছে ৭টি স্টার। লন্ডনের গর্ডন রামসে তার স্বাক্ষরিত রেস্তোরাঁ। স্কটিশ এই শেফ বিশ্বব্যাপী ৩৫টি রেস্তোরাঁর সঙ্গে যুক্ত। ২০১৯ সালে গর্ডন রামসে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের ৩৫তম সর্বাধিক উপার্জনকারী সেলিব্রিটি ছিলেন।

টমাস কেলার
যুক্তরাষ্ট্রের শেফদের জনপ্রিয় টমাস কেলার। আমেরিকান এই শেফের কাছে বর্তমানে ৭টি স্টার রয়েছে। তার ৫টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। কেলার ক্যালিফোর্নিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা। তবে ফরাসি রান্নার জন্য আমেরিকায় তিনি ব্যাপকভাবে বিখ্যাত। ফ্রান্সেও তার রান্নার গুণগান রয়েছে।

ইয়োশিহিরো মুরাতা
সারা বিশ্বে ৪টি রেস্তোরাঁ এবং ৭টি মিশেলিন স্টার রয়েছে বিখ্যাত শেফ ইয়োশিহিরো মুরাতার। জাপানি এই শেফকে রন্ধন জগতের আইকন বলা যায়। প্রায় ৫০ বছর ধরে তিনি জাপানি খাবারের প্রচার চালাচ্ছেন। কাইসেকি রন্ধনপ্রণালির মাস্টার হিসেবে বিবেচিত তিনি। ২০২০ সালে তাকে এশিয়ার ৫০টি সেরা রেস্তোরাঁর পুরস্কার প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ আমেরিকান এক্সপ্রেস আইকন পুরস্কার দেওয়া হয়। কিয়োটোর কিকুনোই-এর তৃতীয় প্রজন্মের মালিক মুরাতা। যেখানে তিনি আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের ক্ল্যাসিক কাইসেকি খাবারের প্রচলন রেখেছেন।

সেজি ইয়ামামোটো
শতাব্দীর সবচেয়ে আইকনিক জাপানি শেফদের মধ্যে একজন হচ্ছেন সেজি ইয়ামামোটো। তিনি রান্নার বিজ্ঞান গবেষণা করেছেন। ইয়ামামোটোর টোকিও রেস্তোরাঁর নাম রিউগিন জোয়েল রোবুচন। তিনি এখন দুটি বিদেশি শাখা পরিচালনা করছেন। একটি হংকংয়ে অন্যটি তাইপেইতে। উভয়ই এশিয়ার ৫০টি সেরা রেস্তোরাঁর তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০১৯ সালে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস আইকন অ্যাওয়ার্ডের প্রথম বিজয়ী হিসেবে ভোট পান।

আন্দ্রেয়াস ক্যামিনাডা
বহু পুরস্কার বিজয়ী সুইস শেফ আন্দ্রেয়াস ক্যামিনাডা। তিনি প্যাস্ট্রি শেফ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২৬ বছর বয়সে তিনি সুইস আল্পসের একটি ঐতিহাসিক দুর্গ রেস্তোরাঁ ‘Schloss Schauenstein’-এ শেফের দায়িত্ব পান। রেস্তোরাঁটি অতুলনীয় সাফল্য অর্জন করে। এরপর তিনি দুটি রেস্তোরাঁর মালিক হন।

হেস্টন ব্লুমেনথাল
হেস্টন ব্লুমেনথাল বিশ্বের বিখ্যাত শেফদের অন্যতম একজন। তার প্রতিটি রান্নায় নিজস্ব স্বাক্ষর থাকে। তিনি তার রান্নায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিও ব্যবহার করেন। রিডিং, ব্রিস্টল এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ শেফ মাস্টারশেফ এবং  অন্যান্য টিভি সিরিজেও নিয়মিত অতিথি হিসেবে দেখা যায় হেস্টন ব্লুমেন্থালকে।

সূত্র : ফ্লিকার

Link copied!