• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
শাশুড়ি দিবস

বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ নয়, হবে মিত্র


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২২, ০৫:১৯ পিএম
বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ নয়, হবে মিত্র

টিভি চ্যানেলের নাটক কিংবা বাস্তবজীবনের অধিকাংশ ঘরেই একটাই চর্চার বিষয়-‘বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ’। বহু আগ থেকেই এটি চলে আসছে। বউ-শাশুড়ির মধুর সম্পর্ক দেখলে উল্টো সবাই হিংসে করে। কারণ কম-বেশি সবাই বউ-শাশুড়ির যুদ্ধেই অভ্যস্ত। 

আধুনিক যুগের চিত্রটা অনেকটাই পাল্টে গেছে। এখন বউ আর শাশুড়ির সম্পর্ক হয় বান্ধবীর মতো। তাদের বোঝাপড়াটাও বেশ ভালোই হয়। একসঙ্গে ঘোরাফেরা, একই রকম পোশাক পরা, পছন্দের খাবার বানিয়ে খাওয়ানো এমন সবকিছুই এখন শেয়ার করে বউ আর শাশুড়ি। সম্পর্কের তিক্ততা থেকে বেরিয়ে মধুর সময় কাটাচ্ছেন আধুনিক বউ-শাশুড়িরা।

২৩ অক্টোবর ‘জাতীয় শাশুড়ি দিবস’। প্রতি বছর অক্টোবরের চতুর্থ রোববার পালিত হয় দিবসটি। দিনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে শাশুড়ির প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া এবং তার আদর ও অবদানকে কদর করা। মানে শাশুড়ির প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠার উপলব্ধি বাড়াতেই দিবসটি পালিত হয়। বিশেষ দিবসে এই দিনটিকে বিশেষ করে তোলার দায়িত্ব আপনার। তবে একটি দিনেই নয়, শাশুড়ির প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ আর শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে প্রতিদিনই।

১৯৩৩ সালের ৫ মার্চ টেক্সাসের আমারিলোতে স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক ‘শাশুড়ি দিবস’টি প্রথম  উদযাপন করেন। পরবর্তী সময়ে এই দিনটি অক্টোবরের চতুর্থ রোববার পালিত হওয়া শুরু হয়। যা এখন অবদি বহাল রয়েছে। দিনটিকে শাশুড়ির প্রতি উত্সর্গ করে সম্পর্ককে আরও মধুর করে নিতে পারেন।

মা দিবস, বাবা দিবস পালিত হয়। কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ির অবদানকে অস্বীকার করা যায় না। তাই একটি বিশেষ দিন তো চাই। শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া শুধু মেয়েদের জন্যই নয়, বরং ছেলেদেরও হতে হবে আন্তরিক। একই রকমভাবে ভাবতে হবে দুই পক্ষকেই।

একটি পরিবারে নিজের স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ভালো আছেন, অন্যদিকে নিজের সবচয়ে মূল্যবান সম্পদ মেয়েকে আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে শ্বশুর- শাশুড়ি। যিনি সবকিছুই গুছিয়ে রেখেছেন। নতুন সংসারও আপনার হাতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তিনিই হচ্ছেন শাশুড়ি। বলা যায়, নতুন পথচলাকে সহজ করে দিতে শাশুড়ির ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। 

গবেষণায় উঠে এসেছে, বতর্মানে ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষের কাছে বন্ধু হলো শাশুড়ি। যিনি এখন বউদের অনুপ্রেরণা যোগায়, সংসারী হতে নানা শিক্ষা দেয়, সেই সঙ্গে সমর্থন ও প্রচুর ভালোবাসা তো রয়েছেই। পারিবারিক কলহে শুধু বউদের দোষ খুঁজে বেরানোর মতো শাশুড়ি এখন টিভি নাটকেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাস্তবজীবনে এই চিত্র এখন অনেকটাই রঙিন।

সবকিছুর ভিড়ে কিছু বউ-শাশুড়ির সম্পর্কে জটিলতা থাকতেই পারে। এক্ষেত্রে উদার হতে পারেন আপনি। একে অপরের দোষ খোঁজা বন্ধ করুন, বোঝাপড়া ও সমঝোতায় যে কোনও পরিস্থিতি মানিয়ে নিন। তবেই সংসারে আনন্দ বহাল থাকবে। 

শাশুড়িকে মায়ের মর্যাদা দিন। নিজের মায়ের প্রতি যেমন শ্রদ্ধাশীল আপনি, শাশুড়িকেও তেমন মর্যাদায় বসান। ভালোবাসা প্রদর্শনে কখনওই কার্পন্য করবেন না।

নিজের জন্মদাত্রী মায়ের শাসন নিয়ে যেমন অভিযোগ ছিল না তেমনই শাশুড়ির শাসনকেও মাথা পেতে নিন। সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে শোভনীয় হয়। সব সময় মন্দ দিক না দেখে ভালো দিকটাও বিবেচনায় রাখুন।

শাশুড়ি কটু কথা বলেও সব কথার উত্তর না দেওয়াই ভালো। নীরবে সহ্য করুন। এক সময় তিনিই উদার হবেন। ভদ্রতা বজায় রাখতে এবং গুরুজন হওয়ায় শাশুড়ির সঙ্গে তর্কে জড়াবেন না। বরং কৃতজ্ঞ থাকুন। ছোটখাট বিষয়ে তার সঙ্গে আলাপ করুন। তাকে ধন্যবাদ জানান। 

স্বামীর কাছে শাশুড়িকে নিয়ে মন্দ কোনও কথা বলবেন না। তেমনি শাশুড়ির কাছেও স্বামীকে নিয়ে মন্দ কিছু বলবেন না। এতে আপনি নেতিবাচক হয়ে উঠতে পারেন। বরং স্বামীর মন জয়ে শাশুড়ির পরামর্শ নিতে পারেন। শাশুড়ির কথার গুরুত্ব দিন। তাকে কাজে সাহায্য করুন। দেখবেন সংসারে সুখ আসবে।

শাশুড়ি দিবসকে বিশেষ করে তুলতে তার প্রিয় কাজটি করুন। তাকে উপহার দিন। একসঙ্গে ঘুরে আসুন। রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতে পারেন। প্রিয় সিনেমা দেখে আসুন। কিংবা তার পছন্দের মতোই দিনটি উদযাপন করুন। বৃদ্ধাশ্রম নয়, শ্বশুড়-শাশুড়ি স্থান হোক আপনার ঘরের সবচেয়ে সুন্দর কক্ষে। তাদের মন রক্ষার্থে কমতি যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখুন। মনে রাখবেন, একসময় আপনিও কারও শাশুড়ি হবেন এবং এমন পরিস্থিতির সঙ্গে আপনারও মানিয়ে নিতে হবে। 

Link copied!