চাকরি থেকে বাদ দিতে অভিনব ফন্দি

সম্প্রতি চীনের একটি প্রতিষ্ঠান তাদের কিছু কর্মী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা সরাসরি চিঠি দিয়ে কর্মীদের বিদায় দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি একটি অভিনব কৌশল অবলম্বন করে। এর ফলে অনেক কর্মী বাধ্য হয়েই চাকরি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন। এই ফন্দিতে প্রতিষ্ঠানটিকে কর্মীদের কোনো ক্ষতিপূরণের অর্থও দিতে হয়নি।

প্রতিষ্ঠানটি চীনের শানসি প্রদেশের। প্রতিষ্ঠানটির চ্যাং নামের সাবেক এক কর্মীর মুখে জানা গেছে পুরো ঘটনা। তাদের হঠাৎ একদিন জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কুইনলিং পর্বতমালায়। যেটি খুবই দুর্গম। শহর থেকে সেখানে যেতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। যাতায়াতের জন্য গাড়িও তেমন পাওয়া যায় না।

চ্যাংয়ের কথায়, ‘আমার সহকর্মী, যাদের গাড়ি নেই তাদের সেখানে যেতে বাসের ওপর ভরসা করতে হতো। আর বাসও সব সময় থাকে না। তিন ঘণ্টা পরপর ছাড়ে বাস। এরপর বাস থেকে নেমে আরও তিন কিলোমিটার এবড়োখেবড়ো পাহাড়ি পথ হেঁটে পৌঁছাতে হতো নতুন কার্যালয়ে।’

নতুন অফিসের পরিবেশও নাকি ভালো ছিল না। চ্যাংয়ের ভাষ্যমতে, নারী কর্মীদের জন্য অফিসে টয়লেটের ব্যবস্থা ছিল না। তাদের আশপাশের গ্রামে থাকা টয়লেট ব্যবহার করতে হতো। এ জন্য অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হতো তাদের। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাতে ফেরার পথেও ছিল নিরাপত্তার অভাব। বিশেষ করে কুকুরের আক্রমণের ভয় ছিল।

এত প্রতিকূলতার মুখে যা হওয়ার, তাই হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির ২০ জনের বেশি কর্মীর মধ্যে চ্যাংসহ ১৪ জন চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।অবাক করা বিষয় হলো—কর্মীদের চাকরি ছাড়ার মাত্র ৪ দিন পরই প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় আবার শহরের আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় নতুন কর্মী নিয়োগের।

এরপরই চাকরি ছেড়ে দেওয়া কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় অসন্তোষ। তাদের ধারণা, কর্মী ছাঁটাই করতেই কার্যালয় সরানোর এই অভিনব ফন্দি আঁটা হয়েছিল। যদিও প্রতিষ্ঠানটি তা মানতে নারাজ। তবে সাবেক এক কর্মীর ভাষ্য, ‘আমাদের বলা হয়েছিল বহুদিন ধরে পার্বত্যাঞ্চলে কাজ করতে হবে। যদি তারা এই অল্প সময়ের কথা আমাদের জানাত, তাহলে কঠিন পরিবেশের মধ্যেও আমরা চাকরি ছাড়তাম না।’

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট