• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শীতে গাঁদা ফুল চাষ করার উপায়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম
শীতে গাঁদা ফুল চাষ করার উপায়
গাঁদা ফুলের ওষধিগুণও রয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

শীতকালে ফুলের কথা মনে হলেই সবার আগে চলে আসে গাঁদাফুল। শীতের ফুল হলেও সারাবছরই পাওয়া যায় এটি। বিভিন্ন উৎসবে গাঁদার চাহিদা থাকে অনেক। এ ফুলের ওষধিগুণও রয়েছে। 

কেটে যাওয়া ত্বকের রক্ত পড়া বন্ধ করতে, কাটা ঘা শুকাতে ও জীবাণুনাশক হিসাবে গাঁদা পাতার রস খুব উপকারী। কেউ এই ফুলের চাষ করেন ব্যবসায়িকভাবে আর কেউ শখের জন্য। যে কারণেই হোক না কেন গাঁদার চাষ করার কিছু নিয়ম রয়েছে। চলুন জেনে নিই-

বিভিন্ন জাতের গাঁদা
বিভিন্ন জাতের গাঁদা আমাদের দেশে চাষ হয়। যেমন, চাইনিজ, রাজগাঁদা, আফ্রিকান, ফরাসি এসব। রঙ ভেদে গাঁদার জাত হচ্ছে হলুদ, লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল হলুদের মিশ্রণ ইত্যাদি। আফ্রিকান জাতের গাছ সোজা ও লম্বা, ৩০-১০০ সেমি লম্বা হয়। 

ফুল কমলা, হলুদ ও গাঢ় খয়েরি রঙের ছিটা দাগযুক্ত হয়। ফরাসি গাঁদার গাছ খাট ও ঝোপালো, ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। ফুল আকারে ছোট,  প্রচুর ধরে ও রঙ লাল। কমলা গাঁদার গাছ খুব শক্ত। ফুল গাঢ় কমলা। 

শাখা প্রশাখা বেশি হওয়ায় ফুল বেশি ধরে। ফুলের আকার ৪.৫ থেকে ৫ সেমি। অনেক দিন পর্যন্ত ফুল ধরে। প্রতি গাছে ৫৫-৬০ টি ফুল পাওয়া যায়।

চাষের পদ্ধতি
শাখা কলম ও বীজের মাধ্যমে গাঁদা ফুলের চারা তৈরি করা যায়। নভেম্বরে বীজতলায় বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করতে হয়। সারা বছর চাষ করা গেলেও শীতকালে ফলন ভালো হয়। শাখা দিয়ে কলম করার জন্য গাঁদা গাছের শাখা ৮-১০ সেমি লম্বা করে কাটতে হবে। 

বীজতলায় শাখা ডালের টুকরাগুলো দু একটি পর্বসহ রোপন করতে হবে। উপযুক্ত সময় হচ্ছে মার্চ মাস। নিয়মিত সেচ দিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২০-২৫ দিনের মধ্যে পাতা গজায়।

উঁচু জমি, সুনিষ্কাশিত দো আঁশ ও উর্বর মাটি গাঁদা চাষের উপযোগী। চার থেকে পাঁচবার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হবে। টবে বা পাত্রে চাষ করলে তিন ভাগ দো আঁশ এঁটেল বা দো আঁশ মাটির সঙ্গে একভাগ গোবর মিশিয়ে সার মাটির মিশ্রন তৈরি করতে হবে। 

এই সার মাটি টবে বা পাত্রে বা পলিব্যাগে ভরতে হবে। বীজ থেকে অথবা শাখা থেকে তৈরি একমাস বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ডিসেম্বর মাসে চারা রোপন করতে হয় । সারি থেকে সারির দূরত্ব ৪০-৫০ সেমি এবং চারা থেকে চারার দূরত ৩০-৪০ সেমি হওয়া উচিত। 

চারা উৎপাদন না করে সরাসরি বীজ থেকেও গাঁদা চাষ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি শতকে ৫-৬ গ্রাম বীজ জমিতে বপন করতে হবে।

পরিচর্যা যেভাবে করতে হয়
মাটি শুকানোর আগেই সেচ দিতে হয়। গাছের গোড়ায় পানি জমলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগাছা জন্মালেই নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। গাঁদা ফুলে রোগ বালাই তেমন হয়না।

 তবে পোকা আক্রমণ করলে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। গাছ বড় হলে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে দিলে গাছ সোজা থাকে। এতে ফুলের গুনগত মান ভালো হয়। গাছে ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য ফুল আসার একমাস আগে গাছের ডগা ভেঙে দিতে হবে।

একটি শাখায় ঘন হয়ে অনেকগুলো ফুল বা কুঁড়ি ধরলে ওপরের একটি বা দুইটি রেখে বাকিগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে ফুল বড় হয়। চারা রোপনের ১৫ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করা যেতে পারে। চারা মরে গেলে সেখানে আবার চারা রোপন করা উচিত।

ফুল সংগ্রহের জন্য কাঁচি বা ব্লেড দিয়ে বোটাসহ কেটে সংগ্রহ করতে হবে। খুব ভোরে ফুল তুলতে হয়। চারা রোপনের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গড়ে একটি গাছে জাত ভেদে ১৫-৪০ টি ফুল ধরে।

Link copied!