• ঢাকা
  • বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ সফর ১৪৪৬

রসুন শুধু বয়স আটকায় না, আরও ১০টি আশ্চর্যজনক কাজ করে, কীভাবে খাবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
রসুন শুধু বয়স আটকায় না, আরও ১০টি আশ্চর্যজনক কাজ করে, কীভাবে খাবেন
রসুন। ছবি: সংগৃহীত

দৈনন্দিন খাবারে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল রসুন। সব ধরনের তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয় রসুন। অনেকে রসুনের আচার খেতেও পছন্দ করেন। রান্নাঘরে রসুনের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এটি স্বাদের জন্য রান্নায় ব্যবহার করা হয়। তবে, রসুন কেবল খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে না। এটি একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড। রসুনের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে রসুন শরীরের অনেক উপকার সাধন করে। খাদ্যতালিকায় রসুন রাখলে অনেক উপকারে পাবেন। আসুন জেনে নিন, রসুনের কিছু গুণের কথা-

১. প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রসুন। গবেষণায় দেখা গেছে, রসুনে থাকা অ্যালিসিন শ্বেত রক্তকণিকাকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। নিয়মিত রসুন খেলে ঠান্ডা, সর্দি বা জ্বরের মতো অসুখ কম হয় এবং দ্রুত সেরেও যায়।

২.  রসুন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রায়শই রসুনের পরামর্শ দেওয়া হয়। যাদের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য রসুন উপকারী।

৩. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় রসুন। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ধমনীতে প্লাক জমতে বাধা দেয়। তাই রসুনকে ‘হৃদয়-বান্ধব’ বলা হয়। প্রতিদিন তিনটি রসুনের কোয়া খেলে, কয়েক মাসে রক্তসঞ্চালন প্রবাহ ভালো হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে।

৪. প্রাকৃতিক ডিটক্স হিসেবে কাজ করে রসুন। রসুনে থাকা সালফার যৌগ লিভার সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে, যা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। রসুনে উপস্থিত সালফার যৌগগুলো শরীরের ভারী ধাতু, যেমন সীসা, অপসারণে সাহায্য করে।

৫.  রসুন হজমের জন্য ভালো। পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে। কাঁচা রসুনের প্রিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এটি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা হজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৬. রসুন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায়শই রসুনের কথা উল্লেখ করা হয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য প্রতিদিন তিনটি কোয়া রসুন শর্করার মাত্রা রাখতে সাহায্য করতে পারে।

৭. রসুন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। রসুন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে। রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  উপাদন রয়েছে, যা মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করে।

৮. প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে রসুন। রসুন জীবাণু ধ্বংস করে। রসুনের অ্যালিসিনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতির অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।

৯.  রসুন ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, প্রদাহ এবং বার্ধক্যের ছাপ কমাতে সহায়তা করে।  এটি ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখে।

১০. দীর্ঘায়ু করতে সহায়তা করে রসুন। যদিও কোনো খাবারই দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করে না। তবে রসুনের সমন্বিত বৈশিষ্ট্য হৃদ্‌রোগ, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হজমশক্তি ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কীভাবে খেলে ভালো

সাধারণত রসুনের উপকারিতা পাওয়ার জন্য সকালে খালিপেটে খেতে বলা হয়। রসুনে যে সালফার কম্পাউন্ড থাকে চিবিয়ে খেলে সেটার কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ঝাঁঝালো স্বাদের জন্য খেতে না পারলে মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ভর্তা, শাক রান্না ও মুড়ি মাখানোতে কাঁচা রসুন দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
রসুন ভাজলে বা রান্না করলে তাপে এটির প্রধান রাসায়নিক উপাদান অ্যালিসিনের এর গুণাগুণ নষ্ট হয়। কাঁচা রসুন কেটে ১৫ মিনিট খোলা জায়গায় ছড়িয়ে রেখে তারপর খাওয়া হলে অ্যালিসিন সহজে হজম হয়।
রসুনের আচার খেলে জীবাণুনাশক গুণ পাওয়া যায় না। তবে অন্যান্য উপকারিতা  পাওয়া যাবে।
গর্ভাবস্থায় রসুন না খাওয়া ভালো।
ডায়রিয়া, বমি বা বুকে জ্বালাপোড়া হলে রসুন না খাওয়া ভালো।
অনেকের রসুনে এলার্জি থাকে, তাদের রসুন খাওয়া নিষেধ।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Link copied!