• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তি ও দৃঢ়তার উৎস : বাহাউদ্দিন নাছিম


অঞ্জন আচার্য
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৩, ০২:৪৩ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তি ও দৃঢ়তার উৎস : বাহাউদ্দিন নাছিম

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। জন্ম ১১ নভেম্বর ১৯৬১, মাদারীপুর জেলায়। বর্তমানে তিনি মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য। ছিলেন মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারীও ছিলেন তিনি। সরকারদলীয় এই রাজনীতিকের সঙ্গে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের। সাক্ষাৎকারটি নেন সংবাদ প্রকাশের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক অঞ্জন আচার্য। এটি অনুলিখন করেছেন খাদিজা নিপা।

প্রশ্ন : রাজনীতিতে আসতে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে কতখানি অনুপ্রাণিত হয়েছেন?

বাহাউদ্দিন নাছিম : বাংলাদেশের মানুষের পবিত্র স্থান ও আমাদের রাজনীতির তীর্থস্থান টুঙ্গিপাড়া। সেই টুঙ্গিপাড়ার আলো-বাতাসে আমার বাবা বড় হয়েছেন। ফলে জাতির পিতার সাহচর্যটা এবং তাঁর প্রভাবটা আমার পিতার ওপর অনেক ছিল। ফলে ওই সময়ের নানা বিষয় আমি বিভিন্ন সময় বাবার কাছ থেকেই জেনেছি, মায়ের কাছ থেকে শুনেছি। এ রকম একটা মানুষ সম্পর্কে আমরা শিশু বয়স থেকে আমরা কৈশোর বয়স পর্যন্ত জেনেছি। কিন্তু ওই সময়েই আমাদের এই মহান জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, এ রকম একটা মানুষকে কী কারণে, কী উদ্দেশ্যে, কী স্বার্থে হত্যা করা হয়েছে? যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা তো মানুষের জন্য, দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য অথবা সদ্য স্বাধীন একটা রাষ্টের কল্যাণের জন্য করেছে, বিষয়টা এমন না। তো এই বিষয়টা আমরা সেই সময়েই পারিবারিকভাবে শুনেবুঝে হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। মনস্তাস্ত্বিকভাবে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছি। সুতরাং স্কুলজীবনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়েও অন্তত এটা বুঝেছি, এটা যে ভালো না, এটা অন্যায়, এটা গর্হিত কাজ—এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে। এই কথা বলা থেকে শুরু হলো আমার রাজনীতির পাঠশালায় পদার্পণ।

প্রশ্ন : ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কীভাবে দলকে সংগঠিত করেন?

উত্তর : আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই তখন থেকে। পরবর্তী সময়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি হই, তখন পড়াশোনা করি আর রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ঘিরেই তখন বাংলাদেশের রাজনীতি। স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে, সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে অধিকার ফিরিয়ে আনা, হ্ত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতির অবসান, গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসা, জাতির পিতার খুনিদের বিচারের আওতায় আনা, বিচারের দাবিকে সোচ্চার করা, বিচার করা—এই আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম। পরে ইউনিভার্সিটির পড়াশোনা শেষ করে আমি সরাসরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। ১৯৮১ সাল থেকেই আমি রাজনীতির সঙ্গে আছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার কর্মী হিসেবে কাজ করি। উনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে আসার আগে থেকেই আমি কাজ করি। ৮৬ সালের পর ৮৭ সালের গোড়ার দিক থেকে ২৪ ঘণ্টা আমি তার পাশে থেকে কাজ করেছি। আমি স্বপ্রণোদিত হয়েই নিজের ইচ্ছায় নিজের আগ্রহ থেকেই এ কাজ শুরু করেছি। তারপর থেকে দায়িত্ব পালন করে গেছি। রাজনীতিতে সচেতন থেকে নানান কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হতে একটা সময় পর মনে হয়েছে মানুষের তো একটাই জীবন। সে জীবনে নাহয় জাতির পিতার আদর্শের জন্য তাঁর হত্যাকারীদের বিচারের জন্য কাজ করি। জিয়াউর রহমানসহ সব স্বৈরশাসকই এই খুনিদের রক্ষা করেছে। সুতরাং তার বিরুদ্ধে তো কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তি ও দৃঢ়তার উৎস কী বলে মনে করেন?

উত্তর : আল্লাহ ওনাকে যে শক্তি বা সাহস দিয়েছেন, তা অসাধারণ। এটাকে ভাবা যায় না, কল্পনা করা যায় না। একটা সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সম্ভব না। এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দ্বারা। উনি সেই দুর্যোগ-দুঃসময়ে নানান প্রতিকূলতা এমনকি তাকে মৃত্যুভয়, তাকে নিপীড়ন, নির্যাতন, গ্রেপ্তার কী না করা হয়েছে। উনি নিজেও বলেন, ‘আমি শরণার্থী হিসেবে ভারতে ৬ বছর কাটিয়েছি। সেখান থেকে ফিরে আসার পথে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আসলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, এ রকম ভয় দেখানো হয়েছে। উনি যাতে দেশে আসতে না পারেন, তার জন্য একটা কমিটি করা হয়েছিল তৎকালীন স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায়। পরবর্তী সময় তারা তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিল। শেখ হাসিনা দেশে এলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, আসতে দেওয়া হবে না, এ রকম নানা ধরনের হুমকিধমকি দেওয়া হয়েছে। এগুলোকে মোকাবিলা করে এসেছে, উপেক্ষা করেই এসেছে। তিনি এসে ২১ বছর অপেক্ষা করেছেন। ২১ বছর মাঠে-ঘাটে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বলা হয়, এই সময় এবং পরবর্তী সময় মিলিয়ে তাকে ২১ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে রক্ষা করেছেন। এটাও তো অপার ক্ষমতাবলে। যেভাবে গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে সরাসরি নানাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। গাড়িতে আক্রমণ, ৩২ নম্বরের বাড়িতে গ্রেনেড হামলা হয়েছে, প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিস্তানে হাজার হাজার মানুষের সামনে। এগুলো থেকে তো অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছেন। এগুলো সব তো শুধু ওনাকে নিশ্চিহ্ন করা না, উদ্দেশ্য উনি যে পথে, যে লক্ষ্যে স্থির আছেন, সে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া, বিচ্যুত করা বা ব্যর্থ করা। ওনাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ওনার রাজনৈতিক চরিত্র হননের জন্য কত ধরনের যে অপচেষ্টা করা হয়েছে, এর সবকিছুই তিনি সাহসের সঙ্গে সৎ সাহস নিয়ে মোকাবিলা করেছেন। অপপ্রচার ও মিথ্যাচার এগুলো বিএনপিই যে শুধু করছে তা নয়, এটা সব স্বৈরতান্ত্রিক সরকার সবাই করেছিল।

কথাপ্রকাশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!