পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলঙ্কান নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে দুই দেশেই বিক্ষোভ হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বার্তা সংস্থা এএনআই জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে পাকিস্তান দূতাবাসের বাইরে বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নিজ দেশের নাগরিক হত্যার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
এক টুইটে তিনি বলেন, “প্রিয়ন্তা দিয়াওয়াদানার ওপর পাকিস্তানের উগ্রবাদীদের নৃশংস ও প্রাণঘাতী হামলা দেখে আমি হতবাক। নিহতের স্ত্রী ও পরিবার প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
এছাড়াও নিহতের পরিবার হতাশা প্রকাশ করে দোষীদের বিচার দাবি করেছে। প্রিয়ান্থা কুমারার স্ত্রী নিলুশি দিসানায়াকা বিবিসিকে বলেন, “আমার স্বামীর হত্যার বিচারের জন্য পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা উভয় দেশের সরকারের প্রতি সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।”
পাঞ্জাব প্রদেশের একটি ক্রীড়াসামগ্রীর কারখানার ম্যানেজার ছিলেন প্রিয়ান্থা কুমারা নামের ঐ ব্যক্তি। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, ‘আরবি লেখা’ সম্বলিত একটি পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন তিনি। এমনকি তার দেহ প্রকাশ্যে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) এ ঘটনা ঘটে বলে খবরে বলা হয়।
পুলিশ জানায়, সাত বছর ধরে পাঞ্জাবের শিল্পনগরী শিয়ালকোটের প্রতিষ্ঠান রাজকো ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার পদে দায়িত্বে ছিলেন দিয়াওয়াদনা। সম্প্রতি কারখানার ভবনের সংস্কারের কাজের জন্য দেয়াল থেকে কিছু পোস্টার তুলে ফেলা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে সেখানে পবিত্র কোরআনের বাণী কিংবা মহানবী হজরত মুহাম্মদের নাম লেখা ছিল। পোস্টারটি ফেলে দেওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে উপস্থিত লোকজন। সেকারণেই জনরোষের মুখে পড়েন প্রিয়ান্থা দিয়াওয়াদনা।
সামাজিক মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, দিয়াওয়াদনাকে মেঝেতে ফেলে তাকে মারতে মারতে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষুব্ধরা। পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর লাশে আগুণ দিয়ে পোড়ানো হয়। লাশের সঙ্গে ছবিও তোলেন অনেকে।