সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে তীব্র তাপদাহ ও অসহনীয় গরমে এখন অবধি মৃত হজযাত্রীদের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মারা যাওয়া এসব হজযাত্রীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অনিবন্ধিত ছিলেন। আর মারা যাওয়া সহস্রাধিক হজযাত্রীর মধ্যে কেবল মিসরেরই নাগরিকই আছেন ৬৫৮ জন। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সৌদি হজযাত্রীদের প্রাণহানির এই সংখ্যা জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
বার্তা সংস্থা এএফপি সৌদির সরকারি প্রশাসন, মক্কার বিভিন্ন হাসপাতাল এবং বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের তথ্য সহায়তার ভিত্তিতে মৃত হজযাত্রীদের সংখ্যাগত টালি করেছে। সেই টালির সর্বশেষ পরিস্থিতি থেকেই প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের একজন কূটনীতিক এএফপিকে জানিয়েছেন, হজ পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারানো সহস্রাধিক হজযাত্রীর মধ্যে মিসরের নাগরিক আছেন ৬৫৮ জন। নিহতদের তালিকায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নতুন করে যুক্ত হয়েছে মিসরের আরও ৫৮ হজযাত্রীর নাম।
মিসরীয়দের প্রাণহানি বেশি কেন
সৌদিতে মারা যাওয়া মিসরীয়দের প্রায় ৬৩০ জনই অবৈধভাবে হজ করতে গিয়েছিলেন। সেজন্য তারা প্রখর তাপপ্রবাহ থেকে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেননি। এমন তথ্য জানিয়ে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের ওই কূটনীতিক বলেন, “যাত্রীদের জন্য যেসব সুবিধা ও পরিষেবা বরাদ্দ করেছে সৌদির সরকার, সেগুলো থেকেও মিসরীয় হজযাত্রীরা বঞ্চিত হয়েছেন। অবৈধভাবে সৌদিতে প্রবেশ করায় থাকা, খাওয়া এবং এয়ার কন্ডিশন সুবিধাও তারা পাচ্ছিলেন না।
এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৮ লাখ হজযাত্রী হজ করতে সৌদিতে গেছেন। বিদেশি হজযাত্রীদের অনেকেই মক্কার এবারের তীব্র গরমে অভ্যস্ত নন। তাছাড়া হজযাত্রীদের মধ্যে এমন হাজার হাজার যাত্রী রয়েছেন, যারা বিধি মেনে সৌদিতে আসেননি। যেসব হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, তাদের একটি বড় অংশই অবৈধভাবে সৌদিতে প্রবেশ করেছিলেন বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।
অবশ্য, মিসরের বাইরে জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকরাও রয়েছেন মৃত হজযাত্রীদের তালিকায়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার হজ করতে মক্কায় গিয়ে ২৭ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর গত ১৪ জুন থেকে সৌদিতে হজ শুরু হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ ধরে মক্কার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। বুধবারও (১৯ জুন) মক্কার তাপমাত্রা ছিল ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
