জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিচার এবং সাজা ন্যায্য বা ন্যায়সঙ্গত নয় বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার রায় ঘোষণার পর সোমবার সংস্থার ওয়েবসাইটে এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য জানানো হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট মাসে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় সংঘটিত গুরুতর লঙ্ঘন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের জন্য যারা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী তাদের অবশ্যই তদন্ত এবং ন্যায্যতার মাধ্যমে বিচার করা উচিত। তবে, এই বিচার এবং সাজা ন্যায্য বা ন্যায়সঙ্গত নয়। ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা প্রয়োজন, তবুও মৃত্যুদণ্ড কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও জটিল করে তোলে। এটি চূড়ান্ত নিষ্ঠুর, অবমাননাকর এবং অমানবিক শাস্তি। কোনো বিচার প্রক্রিয়ায় এর কোনো স্থান নেই।
বিবৃতিতে অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মান পূরণ করে এমন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচার পরিচালনা করা হোক। এর পরিবর্তে এই বিচার এমন একটি আদালতে পরিচালিত হয়েছে যার স্বাধীনতার অভাব এবং অন্যায্য বিচারের ইতিহাসের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব বলেন, অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে বিচার এবং রায়দান ন্যায্য বিচারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উদ্বেগ তৈরি করে। যদিও শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন আদালত-নিযুক্ত একজন আইনজীবী, তবুও আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময় স্পষ্টতই অপর্যাপ্ত ছিল। বিচারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মান পূরণ করে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
তিনি বলেন, এটি কোনো ন্যায্য বিচার ছিল না। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ভুক্তভোগীরা আরও ভালো বিচার পাওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের এমন একটি ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া প্রয়োজন, যা সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ, সব ধরনের পক্ষপাতের সন্দেহের বাইরে থাকবে এবং যা মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে আরও বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটাবে না। কেবল তখনই সত্য, ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ যথাযথ এবং অর্থপূর্ণভাবে করা সম্ভব হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোনো ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না। অপরাধের ধরন বা পরিস্থিতি, ব্যক্তির দোষ বা নির্দোষ হওয়া অথবা রাষ্ট্র যে পদ্ধতিতে ফাঁসি কার্যকর করে, কোনো ক্ষেত্রেই অ্যামনেস্টি মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না।




































