পূর্ব লিবিয়ার বন্দরনগরী দেরনার কিছু অংশ ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সেখান থেকে উদ্ধার করা মৃতদেহগুলো গণকবর দেওয়া হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) আঘাত হানা ড্যানিয়েল ঝড়ের সময় একটি বাঁধ ভেঙে দেরনায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। যাতে অন্তত ২ হাজার ৩০০ জন মারা যান। ১০ হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একটি খনন যন্ত্র দিয়ে দেরনার কবরস্থানে কাজ চলছে। যেখানে মরদেহগুলো ব্যাগ ও কম্বলে মুড়িয়ে একসঙ্গে কবর দেওয়া হচ্ছে।
দেরনার এক স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ কামাতি বলেন, উদ্ধারকর্মীরা এখনো নিঁখোজদের খোঁজ করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “আমরা সব লিবিয়ান তরুণদের আহ্বান জানাই, যাদের ডিগ্রি আছে বা যেকোনো মেডিকেল অ্যাফিলিয়েশন আছে তারা দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের নার্সের ঘাটতি আছে, আমাদের সাহায্য দরকার।”
মিসরসহ বেশ কিছু দেশ থেকে সাহায্য আসতে শুরু করছে লিবিয়াতে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইরান, ইতালি, কাতার ও তুরস্ক জানিয়েছে যে তারা সাহায্য পাঠিয়েছে বা পাঠাতে প্রস্তুত। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশটির দুই অংশে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার কাজ করছে।
পানি প্রকৌশল বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেন, সম্ভবত দেরনা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের একটি বাঁধ প্রথমে ভেঙে যায়। ফলে পানি প্রবেশ করে দ্বিতীয় বাঁধটি ভেঙে দেয়। যেটি শহরের কাছাকাছি অবস্থিত।
রোববার রাতে ধারন করা করা ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, প্রায় ১ লাখ জনসংখ্যার শহর দেরনার মধ্য দিয়ে বন্যার জল নদীর মতো বয়ে যাচ্ছে। গাড়িগুলো স্রোতের মাঝে অসহায়ভাবে ভাসছে।
দিনের আলোর চিত্রে দেখা যায়, কাদা ও ধ্বংসস্তূপে ঢাকা রাস্তার সঙ্গে ধ্বংসপ্রাপ্ত আশেপাশের এলাকাগুলোকে।
অনেক মানুষ পানিতে ভেসে গিয়েছেন। অনেকে বেঁচে থাকার জন্য ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল সরকারের হিশাম চকিউয়াত বিবিসিকে বলেন, “আমি যা দেখেছি তাতে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এটি অনেকটা একটি সুনামির মতো ছিল।”
পূর্ব লিবিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওথমান আবদুলজালিল দেরনা মোবাইল ফোনে বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, “ধ্বংসের পরিমাণ দেখে আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম... ট্র্যাজেডিটি খুবই ভয়াবহ এবং এটি সামলানো দেরনা ও সরকারের সক্ষমতার বাইরে।”