ইউরোপের বাইরে থাকা কতজন অভিবাসী কাজের ভিসায় ইতালিতে যেতে পারবেন, সেটি নিয়ে প্রতিবছর ডিক্রি জারি করে দেশটির সরকার। ২০২৩ সালের জন্য এই সংখ্যা ৭ হাজার বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৭০৫টি করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে ইতালি সরকার বিভিন্ন খাতে প্রায় ৮৩ হাজার নন-ইউরোপিয়ান কর্মী আনার ঘোষণা দিয়েছিল।
দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশিরা ‘দেক্রেতো ফ্লুসি’-এর আওতায় আবেদন করে ইতালি যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরাও আবেদনযোগ্য দেশের তালিকায় রয়েছে।
মৌসুমি ভিসা (সিজনাল) এবং নিয়মিত ভিসা (নন-সিজনাল) আবেদন ২৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। চলবে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করা যাচ্ছে। তবে সরাসরি আবেদনের কোনো সুযোগ নেই।
বরাবররে মতো ইতালি বা যেকোনো দেশে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে বাংলাদেশ থেকে আগ্রহী বেশিরভাগ আবেদনকারী সাধারণত বেসরকারি এজেন্সিগুলোতে ভিড় করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইতালিতে চাইলেই কোনো এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা যায় না।
কৃষি, হোটেল-রেস্তোরাঁ, নির্মাণ খাতসহ বিজ্ঞপ্তিতে তালিকাভুক্ত খাতগুলোতে মৌসুমি ও স্পন্সর উভয় ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন একমাত্র নিয়োগকর্তা। অর্থাৎ ইতালিতে কৃষি বা অন্যান্য খাতে ব্যবসা করছেন এমন কোনো মালিক যদি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মীর প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে তিনি আবেদনকারীর বিস্তারিত তথ্য ও যাবতীয় সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তরে আবেদন করবে।
ইতালির শ্রম ও সামাজিক পরিকল্পনাবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ডিক্রি অনুযায়ী, এই বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের অধীনে ৪৪ হাজার কোটা মৌসুমি বা সিজনাল কাজের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এই খাতে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়ে কৃষি খাতে। অন্যদিকে ২০২৩ সালে, ৩৮ হাজার ৭০৫টি কোটা নন সিজনাল বা স্পন্সর ভিসার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। স্পন্সর ভিসা পর্যটন, টেলিযোগাযোগ এবং নির্মাণ খাতে আবেদন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সংরক্ষিত।
এ ছাড়া ৫০০টি কোটা রাখা হয়েছে স্ব-নিযুক্ত ব্যক্তি বা স্টার্টআপ ভিসার আওতায় ইতালিতে আসতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য। এই ক্যাটাগরিতে মালিক, উদ্যোক্তা, বিশিষ্ট শিল্পী, সিইও, অডিটর এবং কমপক্ষে তিন বছর ধরে কোনো একটি ইতালীয় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে আছেন, এমন ব্যক্তিদের জন্য স্টার্টআপ ভিসা প্রযোজ্য।
উল্লেখ্য, সরকার অবৈধপথে অভিবাসী আসা বন্ধ করতে গত বছরের শেষে বৈধ পথে কর্মী আনার বিষয়ে আলোচনা করে। পরে এ বছরের শুরুতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলে তার ধারাবাহিকতায় ২৭ মার্চ সকাল ৯টা থেকে আবেদন শুরু হয়।