উপজাতিদের মর্যাদা নিয়ে ভারতের একটি আদালতের আদেশের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে মণিপুর রাজ্যের আটটি জেলার উপজাতি গোষ্ঠীগুলো। এই আন্দোলন বুধবার রাত থেকে ব্যাপক সহিংস আকার ধারণ করেছে। সহিংসতা রুখতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘চরম পরিস্থিতিতে’ বিক্ষোভকারীদের ‘দেখা মাত্র গুলির’ নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ অবস্থায় বিজেপির তিন বারের সংসদ সদস্য ভুংজাগিন ভালতেকে মারধর করেছে আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার (৫ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী ইম্ফলের রাজ্য সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে বাড়ি ফিরছিলেন মণিপুরের থানলোনের সংসদ সদস্য ভুংজাগিন ভালতে। পথে আন্দোলনকারীদের রোষানলে পড়েন তিনি।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দেখে পালিয়ে যান তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। এ সময় একা পেয়ে ভুংজাগিন ভালতেকে এবং তার গাড়ির চালককে ঘিরে ধরে শুরু হয় গণপিটুনি।
পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ইম্ফলের ‘রিজিয়োনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস’ (রিমস)-এ নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থায় আশঙ্কাজনক।
ভালতে কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। মণিপুরে বিগত বিজেপি সরকারের আমলে তিনি আদিবাসী ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন।
আনন্দবাজারের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে মণিপুরের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শুক্রবার সকালেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। চূড়াচাঁদপুরসহ বিভিন্ন উত্তপ্ত এলাকায় সেনার ফ্ল্যাগমার্চ চলছে।
এর আগে সহিংসতা রুখতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়। বাহিনী দুটি রাজ্যটিতে সহিংস অঞ্চলগুলোতে ‘পতাকা মার্চ এবং উদ্ধার’ অভিযান পরিচালনা করবে। সেনাবাহিনী রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। ইতোমধ্যে সাড়ে ৭ হাজার বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর শেয়ার করা কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, কর্মকর্তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করছেন।
ভারতের মণিপুর রাজ্যে মেইতেই গোষ্ঠীর মানুষকে ‘স্কেজিউলড ট্রাইবে’ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। তবে আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে প্রদেশের নাগাসম, জোমিস এবং কুকি উপজাতিরা।
আপনার মতামত লিখুন :