জাপানের ইশিকাওয়া অঞ্চলে ৬ দশমিক ৫ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার এক দিন পর কমপক্ষে ৫০টির বেশি আফটারশকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি। এ ছাড়া এ ভূমিকম্পে একজনের নিহত ও ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে, দেশটির কর্মকর্তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করছেন। কিয়োডো সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার মধ্য ইশিকাওয়া অঞ্চলে ১২ কিমি (৭ মাইল) গভীরতায় আঘাত হানা এ ভূমিকম্পে ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি সিঁড়ি থেকে পড়ে মারা যান।
শনিবার (৬ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ভূমিকম্পের পর প্রায় ৫৫টি আফটারশক হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার সকালে কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক আঘাত হানে।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, এর কারণে ভারী বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভূমিধস হতে পারে।
এ ছাড়া অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছে। নিউক্লিয়ার রেগুলেশন কর্তৃপক্ষের মতে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এলাকায় ভূমিকম্পের কারণে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি।
ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের সুজু-এর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ভেতরে আটকা পড়া দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবারসহ জাপানে কয়েক দিনের সরকারি ছুটি চলছে, যা ‘গোল্ডেন উইক’ নামে পরিচিত। যার কারণে অসংখ্য মানুষ অবসর কাটাতে বা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন।
ভূমিকম্পটি জাপানি শিন্ডো সিসমিক স্কেলে সর্বোচ্চ ৬ মাত্রার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্কেলে সর্বোচ্চ সাত মাত্রা পর্যন্ত পরিমাপ করা যায়। শিন্ডো স্কেলে ৬ মাত্রার অর্থ এটি বড় ভূমিধসের কারণ হতে পারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বলেছে ভূমিকম্পটি ৬ দশমিক ২ মাত্রার ছিল।
জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত। তাই দেশটি তীব্র ভূমিকম্পপ্রবণ। দেশটিতে প্রায়ই শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনে থাকে। আর এই ভূমিকম্পপ্রবণের কারণে জাপানে কঠোর নির্মাণ বিধি রয়েছে। তাদের নাগরিকরা ভবনগুলো শক্তিশালী ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মাণ করেন। পাশাপাশি বড় ধরনের ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে নিয়মিতভাবে জরুরি মহড়ার আয়োজন করা হয়।
২০০৭ সালে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে শত শত মানুষ আহত এবং ২০০টির বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :