• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

২০৫০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন ১৩০ কোটি মানুষ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩, ০৪:৪০ পিএম
২০৫০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন ১৩০ কোটি মানুষ

২০৫০ সালের মধ্যে পুরো পৃথিবীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে এই সময়ের মধ্যে ১৩০ কোটি মানুষ রোগটিতে আক্রান্ত হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞান-বিষয়ক সাময়িকী ‘ল্যানসেট’-এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সব দেশেই ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়বে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদন এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৫২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন বলে ধারণা করা হয়। মানুষের মৃত্যুর শীর্ষ ১০ কারণের একটি ডায়াবেটিস। এ ছাড়া ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ শারীরিকভাবে সক্ষমতাও হারায়। পরবর্তী ৩০ বছরে কোনো দেশেই ডায়াবেটিসের হার কমবে বলে আশা করা হচ্ছে না।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, এই বিপুলসংখ্যক মানুষের ৯৫ শতাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই সংখ্যা আগামী তিন দশকে বেড়ে ১৩০ কোটিতে দাঁড়াবে। এর কারণ হিসেবে গবেষণায় বলা হয়েছে, সূস্থলতা এবং দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান চিকিৎসা বৈষম্য।

ডায়াবেটিসে মৃত্যুর অর্ধেকের সঙ্গেই যোগ আছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ওজন বা স্থূলতা। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের শারীরিকভাবে সক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পেছনেও দায়ী এই স্থূলতা। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে মানুষের খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম না করা, ধূমপান ও মদ্যপান।

জাতিসংঘ ভবিষ্যদ্বাণী করেছে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন হবে। তখন প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন ডায়াবেটিস নিয়ে বেঁচে থাকবেন।

বিশেষজ্ঞরা একে উদ্বেগজনক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা বলেছেন, আক্রান্তের দিক থেকে ডায়াবেটিস বিশ্বব্যাপী অন্যসব রোগকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যা মানুষ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য একটি হুমকি।

এ গবেষণা অনুযায়ী, ২০৪৫ সালের মধ্যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তিন-চতুর্থাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবে। ‘ল্যানসেট’-এর আরেক গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশেও সংখ্যালঘু তথা কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক, এশীয়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার দেড় গুণ বেশি। এ জন্য মেডিকেল কলেজ অব উইসকনসিনের গবেষক ‘ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিস বৈষম্যকে’ দায়ী করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘বর্ণবাদী নীতির কারণে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষ পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।’

নিউইয়র্কের অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিন এর চিকিৎসক শিবানী আগরওয়াল বলেন, “ডায়াবেটিস আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে একটি। আগামী তিন দশকের মধ্যে প্রতিটি দেশে, নারী পুরুষ নির্বিশেষে বৃদ্ধি পেতে চলেছে। যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের প্রধান বিজ্ঞানী ও এই গবেষণার অন্যতম সদস্য লিয়ান ওং বলেন, এক খাদ্যের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, এটি কতটা বদলে গেছে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যাভ্যাস—হয়তো বেশি বেশি ফল ও সবজি খাওয়া—এসব গত তিন দশকে অনেকটাই বদলে গেছে। মানুষ বেশি বেশি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে অভ্যস্ত হয়েছে।’

Link copied!