যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট শহর ফ্রেমন্টের পরিত্যক্ত এক ভবন থেকে ১১৫ জনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ভবন থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে সেখান অধিবাসীরা পুলিশকে জানালে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিত্যক্ত ওই ভবনটি রিটার্ন টু নেচার ফিউনারেল হোম নামে একটি প্রতিষ্ঠানের। তারা টাকার বিনিময়ে মানুষের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করে দেয়। সেই প্রতিষ্ঠানটিই সেখানে এতগুলো মরদেহ রেখেছিল। কিন্তু কেন রেখেছিল, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।
তবে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জন হালফোর্ড দাবি করেছেন, তিনি মরদেহগুলোর ট্যাক্সিডার্মি করিয়েছিলেন, তারপরও কেন দুর্গন্ধ ছড়াল, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। ট্যাক্সিডার্মি হলো এমন এক পদ্ধতি, যার সাহায্যে মানুষ বা কোনো প্রাণীর মরদেহের চামড়াকে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়। হালফোর্ডের দাবি, তিনি এই ভবনটিতে মরদেহের ট্যাক্সিডার্মির কাজ করতেন। রাজ্য কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে সিল করে দিয়েছে।
রিটার্ন টু নেচার ফিউনারেল হোমের মালিক জন হালফোর্ড আরও দাবি করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ভবনটি নিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন। তবে ঝামেলা কী ধরনের, সে বিষয়ে কোনো কিছু জানা যায়নি এখনো। তবে কলোরাডো অঙ্গরাজ্য সরকারের নথি বলছে, হালফোর্ড অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও সৎকারের জন্য ভবনটির নিবন্ধন করলেও সেখানে ট্যাক্সিডার্মি করার কোনো অনুমতি ছিল বলে তার নিবন্ধনপত্রে লেখা নেই। এ ছাড়া আগামী মাসেই ভবনটির নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে।
ফ্রেমন্টের শেরিফ অ্যালেন কুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে অভিযুক্ত বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। রাজ্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বিভাগ জানিয়েছে, তারা পুলিশের সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ সময় তিনি জানান, ভবনটির ভেতরের দৃশ্য পুরোপুরি ভয়াবহ।
ফ্রেমন্ট কাউন্টির করোনার র্যান্ডি কেলার জানান, অধিকাংশ মরদেহই গলে গেছে। তাই পরিচয় শনাক্তের জন্য সেগুলোর আঙুলের ছাপ, ডেন্টাল রেকর্ড বা ডিএনএ টেস্ট করা হবে। তবে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কয়েক মাস লেগে যাবে। পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারকে জানানো হবে।