কিংবদন্তি অভিনেতা ও সংসদ সদস্য ফারুক। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২৩ সালের এই দিনে, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই অভিনেতা। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদান রাখা এই নায়কের মৃত্যুদিনটি কাটছে নিভৃতেই-বিনা আয়োজনে, নীরবে।
চলচ্চিত্রে দীর্ঘ সময় সক্রিয় থাকা ফারুক শুধু একজন তারকা ছিলেন না। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্র পরিবারে নির্ভরতার প্রতীক। ‘সুজন সখি’, ‘লাঠিয়াল’, ‘আলোর মিছিল’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সারেং বউ’-এর মতো অসংখ্য হিট ছবিতে অভিনয় করে তিনি দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে কিছু আয়োজন করেছেন স্বজনরা। তবে চলচ্চিত্র অঙ্গনের পক্ষ থেকে চোখে পড়ার মতো কোনো আয়োজন নেই।
১৯৪৮ সালে পুরান ঢাকায় জন্ম নেওয়া ফারুকের আসল নাম ছিল আকবর হোসেন পাঠান দুলু। ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে তার সামাজিক সম্পৃক্ততা শুরু। অংশ নেন ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে। পরে নাম পরিবর্তন করে ‘ফারুক’ হয়ে ওঠেন ঢাকাই সিনেমার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নামগুলোর একটি।
১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জলছবি’ দিয়ে সিনেমায় অভিষেক হয় তার। ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৬ সালে পান আজীবন সম্মাননা।
রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন ফারুক। তিনি ২০১৮ সালে ঢাকা-১৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তবে জীবনের শেষ সময়টা ছিল কষ্টের। কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের ১৫ মে শেষবারের মতো চোখ বন্ধ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহীরুহ।
জনপ্রিয় এই নায়কের মৃত্যুবার্ষিকীতে চলচ্চিত্র পরিবার যতোটা চুপচাপ তার বিপরীতে ফারুকের স্মৃতি ঠিক ততোটাই গর্বের।