• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফারাজ হিরো নয়, বহুবার লিখেছি : লাবু


দেব রায় দীপ্ত
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩, ০২:০৮ পিএম

২০১৬ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশের জন্য একটি শোকাবহ দিন। কারণ, এই দিনেই বাংলাদেশের অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশানের রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। সেই নারকীয় হামলায় দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় মারা যান ফারাজ আইয়াজ হোসেন। তাকে নিয়েই বলিউডের প্রখ্যাত নির্মাতা হানসাল মেহতা নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র ‘ফারাজ’। ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি।

তবে এই সিনেমাটির মুক্তি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন অবিন্তা কবিরের মা, রুবা আহমেদ। অবিন্তাও নিহত হয়েছিলেন হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলায়। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই আপত্তির কথা জানান।

অবিন্তার মা রুবা আহমেদ বলেন, ‘‘এই মুভিতে আমার মেয়ের জন্য আরেকজন জীবন দিয়ে দিয়েছে, সে হিরো। নো, দ্যাটস রং। আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ এটার কোনও প্রমাণ নাই। ওখান থেকে কেউ ফিরে আসেনি। যারা বেঁচে এসেছে তারা কেউ কিচ্ছু জানে না, বলতে পারে না। এখানে কোনো এভিডেন্স নাই যে কেউ হিরো হয়েছে। যদি হিরো হয়ে থাকে তাহলে ২২টা মানুষ যে চলে গেছে, তারা হিরো। আমরা কেউ না। তাই কাউকে এককভাবে হিরো বানানোটা আপনারা যদি আমাকে বলেন, আমি সেটা বিশ্বাস করি না। ইটস অ্যা রং, রং স্টেইটমেন্ট। এটা হতে পারে না। এই মুভিটা রং, এটা কোনদিনই হতে পারে না।’’

ফারাজ সিনেমাটি বানানো হয়েছে বাংলাদেশী সাংবাদিক নুরুজ্জামান লাবুর  "হলি আর্টিজান: একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান" বইটি থেকে। ওই বইতে ফারাজকে হিরো বানানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে লাবু সংবাদ প্রকাশকে বলেন, ‘‘আসলে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে ফারাজকে হিরো বানানো নিয়ে, আমার বইতেও কিন্তু তাকে হিরো বানানো নিয়ে কোনো তথ্য নেই। দুই বান্ধবীকে জঙ্গিদের কাছে রেখে আসতে চায়নি এটা যে মিথ্যা তা আগেও গণমাধ্যমে এসেছে এবং আমার বইসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আমি বহুবার লিখেছি।’’

লাবু আরও বলেন, ‘‘ভেতরে যারা আটকে ছিলেন তাদের সঙ্গে এবং পরে যারা তদন্তের সঙ্গে জড়িত ছিলো তাদের সঙ্গেও আমি কথা বলে এর সত্যতা পাইনি। অবিন্তা কবিরের মা যে প্রতিবাদ করেছেন এটি আসলে তার আবেগের বিষয়। তার এই আবেগকে আমি শ্রদ্ধা জানাই।’’

সিনেমায় ফারাজকে হিরো বানানোর বিষয়ে লাবু বলেন, ‘‘আসলে সিনেমায় তো অনেক কিছু হয়। সব সিনেমাতেই কোনো না কোনোভাবে, কাউকে না কাউকে হিরো বানানো হয়। আবার কাউকে ভিলেন বানায়। সিনেমার হিরো ব্যক্তিজীবনে ভিলেন হতে পারে আবার সিনেমার ভিলেন ব্যক্তিজীবনে হিরো হতে পারে। ফারাজকে যে সিনেমায় হিরো বানিয়েছে সেটি সিনেমার অংশ, সেটা ফিকশন। বাস্তব ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হলেও সিনেমায় যেভাবে রংচং দেওয়া হয় সেটিই এখানে করা হয়েছে।’’

যুক্তরাষ্ট্রের ইমোরি ইউনিভার্সিটির অক্সফোর্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন বাঙালি তরুণী অবিন্তা কবির। ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকায় ফেরার তিন দিন পর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন তিনি। তার স্মৃতি ধরে রাখতে ২০১৭ সালের ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’। হামলার ঘটনার পর সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে জানা যায় অবিন্তা ছিলেন ফারাজের বন্ধু। তারা একই সাথে ওই রেস্তোরাঁয় খেতে যান।

Link copied!