• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করে ট্রোলের শিকার বলিউডের পাঁচ তারকার গল্প


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০৯:১৪ এএম
অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করে ট্রোলের শিকার বলিউডের পাঁচ তারকার গল্প

বর্তমান বলিউডে ভিন্নধর্মী ও সাহসী গল্প বলার প্রতি দর্শকের আগ্রহ বাড়লেও, একই সঙ্গে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিশেষ করে নারী শিল্পীদের ‍নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও ব্যক্তি আক্রমণের ঘটনাও বেড়েছে। অনেকে সাহসী বা অন্তরঙ্গ চরিত্রে অভিনয় করার কারণে পেশাগত সফলতা অর্জন করলেও, সামাজিক মাধ্যমে সহ্য করতে হচ্ছে ট্রোল, কটাক্ষ আর অবমাননা। নিচে এমন পাঁচজন বলিউড তারকার কথা তুলে ধরা হলো, যাঁরা সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসার পাশাপাশি বিতর্ক ও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন।

১. তৃপ্তি দিমরি
‘বুলবুল’ ও ‘কালা’র মতো সিনেমায় অভিনয় দিয়ে প্রশংসা কুড়ালেও, ‘অ্যানিম্যাল’-এ রণবীর কাপুরের বিপরীতে সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের পর থেকে তৃপ্তিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। ‘অ্যানিম্যাল’ সিনেমার অন্তরঙ্গ দৃশ্য ভাইরাল হলে অনেকেই তাকে ‘ন্যাশনাল ক্রাশ’ বললেও, অপরপক্ষে ট্রোল ও যৌন বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে সয়লাব হয় সামাজিক মাধ্যম।
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যাড নিউজ’-এ ভিকি কৌশলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ও 'জানাম' গান নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠে। কেউ কেউ তাঁকে ‘সফট পর্ন গার্ল’ বলেও আক্রমণ করেছে।

২. দীপিকা পাড়ুকোন

‘গেহরাইয়াঁ’ সিনেমায় সিদ্ধান্ত চতুর্বেদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করে ব্যাপক ট্রোলের শিকার হন দীপিকা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে প্রশ্ন তোলে, রণবীর সিং কীভাবে এই দৃশ্য মেনে নিলেন?
উত্তরে দীপিকা বলেন, আমি রণবীরের অনুমতি নিইনি—এটা নিতেও হয় না। তিনি গর্ব করেন আমার পেশাগত সাহস নিয়ে। তার মতে, এই ধরনের প্রশ্ন নিজেই একটি লিঙ্গবৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

৩. মল্লিকা শেরাওয়াত

বলিউডে সাহসী দৃশ্যের প্রথা ভাঙার অন্যতম মুখ ছিলেন মল্লিকা। ‘মার্ডার’ ছবিতে ইমরান হাশমির সঙ্গে তাঁর রোমান্টিক দৃশ্যগুলো একদিকে যেমন তাঁকে রাতারাতি তারকা বানায়, অন্যদিকে একই পরিমাণ সমালোচনাও এনে দেয়।
‘খ্বাহিশ’ সিনেমায় ১৭টি চুম্বন দৃশ্য করার পর তাঁকে একাধিকবার ‘সংস্কৃতি নষ্টকারী’ আখ্যাও দেওয়া হয়।
মল্লিকা বলেন, এই সমাজ পুরুষদের ক্ষমা করে দেয়, কিন্তু নারীর সাহসী ভূমিকার পেছনে চিহ্ন এঁকে দেয়।

৪. ইমরান হাশমি

পুরুষ অভিনেতা হলেও সাহসী দৃশ্যের জন্য সমালোচনার বাইরে ছিলেন না ইমরান হাশমি। একসময় ‘সিরিয়াল কিসার’ তকমা পাওয়া এই অভিনেতা বলেছিলেন, একবার একটা ইমেজ গেঁথে গেলে সেটা ভাঙা কঠিন হয়। ট্রোলিংকে আমি গুরুত্ব দিই না, কারণ এটা এখন বাস্তবতা। ইমরান হাশমি মনে করেন, সাহসী চরিত্র মানেই নিন্দনীয়—এমন ভাবনা বদলানো দরকার।

৫. তনুশ্রী দত্ত

২০০৫ সালে ‘আশিক বানায়া আপনে’ সিনেমায় সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করে তনুশ্রী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।
২০১৮ সালে যখন তিনি বলিউডের যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে #MeToo আন্দোলনে অংশ নিয়ে নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তখন অনেকে তাঁর পুরনো সিনেমার দৃশ্য টেনে এনে তাঁর চরিত্র ও বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
তনুশ্রী বলেন, একজন নারী সাহসী চরিত্র করলেই কি তার প্রতি যৌন নিপীড়ন গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়? এটাই এই সমাজের স্বরূপ।

সিনেমায় সাহসী চরিত্রে অভিনয় মানেই নিন্দা—এমন প্রবণতা এখনো বদলায়নি বলিউডে। যদিও সময় বদলেছে, গল্প বলার ধরন পাল্টেছে, কিন্তু অভিনেত্রীদের ব্যক্তিজীবন আর চরিত্রকে গুলিয়ে ফেলা এখনো একাংশ দর্শকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অভিনয়শিল্পীদের প্রতি সম্মান বজায় রেখে সমালোচনা করাই কি সময়ের দাবি নয়?

Link copied!