জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। অভিনয়ের পাশাপাশি নানা বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকেন সরব। মাহির নতুন নাটক ‘বকুল ফুল’ ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি তার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশের পর ট্রলের শিকার হন, অনেকেই তাকে পর্নোতারকা মিয়া খলিফার সঙ্গে তুলনা করেন। পরে ফেসবুকে এর জবাবও দেন অভিনেত্রী।
সেই বিতর্কের সূত্র ধরে একটি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন সামিরা খান মাহি। চশমা পর সেই ছবি পোস্ট করা পর তির্যক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মাহি বলেন, চশমা পরলেই আমাকে অন্য কারও মতো লাগতে হবে, এমন তো কথা না। আসলে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষ সেক্সুয়ালি হতাশাগ্রস্ত। হতাশাগ্রস্ত বলেই রিডিং গ্লাস পরা এ রকম ছবি দেখে তাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা ওই রকম। এ ছাড়া আমি কোনো কারণ খুঁজে পাই না। একজন আর্টিস্ট অনেক ধরনের ছবি আপলোড করতে পারে। সেটা নিয়ে মানুষ নানান মন্তব্য করতেই পারে। কিন্তু এ ধরনের স্টুপিডিটি, অসভ্যতা তো মানা যায় না। এর আগে আমার বর্ণ নিয়ে, পরনের কাপড় নিয়েও অকারণ সমালোচনা, বিতর্ক তৈরি করল! এবার একটা গ্লাস, রিডিং গ্লাস! সেক্সুয়ালি হতাশাগ্রস্ত মানুষ ছাড়া এ ধরনের চিন্তা সুস্থ মানুষের মাথায় আসার কথা নয়। ব্যাপারটা হচ্ছে, আমি তো আসলে ওইটা বোঝাইনি—যেমন অনেকে বলছে, মিয়া খলিফা, মিয়া খলিফা। সে অন্য রকম, তার একটা পেশা আছে, তার জীবন আলাদা—সে জীবনে সে কী করবে, না করবে, এটা একান্ত তার সিদ্ধান্ত। সে আবার থাকে অন্য একটা দেশে। তাকে নিয়ে তো আমাদের মাথাব্যথা হওয়ার কিছু নেই। সে কোনোভাবেই আমাদের কাছের কেউ না। আমাকে ওর সঙ্গে তুলনা করছে, সেটা সমস্যা না, কিন্তু তারা তুলনা করছে নেগেটিভ উপায়ে, এটাতেই আমার আপত্তি।
একজন আর্টিস্ট অনেক ধরনের ছবি আপলোড করতে পারে। সেটা নিয়ে মানুষ নিয়ে মন্তব্য করতেই পারে। কিন্তু এই ধরনের স্টুপিডিটি, অসভ্যতা তো মানা যায় না। এর আগে আমার বর্ণ নিয়ে, পরনের কাপড় নিয়েও অকারণ সমালোচনা, বিতর্ক তৈরি করল!
পুরুষ শিল্পীর চেয়ে নারী শিল্পীর বেশি বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে মাহি বলেন, এটা ঠিক, পুরুষ শিল্পীদের তুলনায় নারীরা বেশি বুলিংয়ের শিকার হয়। কোনো মেয়েমানুষ সেভাবে পাবেন না, যারা পুরুষদের মতো নোংরা ভাষায় মন্তব্য করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষেরাই বাজে সব মন্তব্য করে। তারা সব সময় নারীদের নেতিবাচক ভাবে। তারা আসলে হতাশাগ্রস্ত পুরুষ, আমি জানি না তারা এসব করে কী পায়, কেন তারা এসব করে! এটা ভুল, অন্যায় এবং অপরাধ। আর নারীদের তো যুগের পর যুগ দাবায়ে রাখার চেষ্টা চলে। এটা তো খুব স্বাভাবিক, ছেলেদের নিয়ে যা কথা হবে, মেয়েদের নিয়ে হবে না। স্বামী–স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, কোনো ধরনের কিছু জানা ছাড়াই শুরুতেই বলে বসবে, স্ত্রীর দোষ ছিল। আমাদের সামাজিক কাঠামোটাই এ রকম। বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
প্রেম বা সম্পর্কের বিষয়ে মাহি খোলাখুলি কথা বলেন। মাহি বলেন, আমি স্বচ্ছতা পছন্দ করি। আমার মনে হয়, সম্পর্কের ব্যাপারে যদি খোলামেলা থাকি, অন্য কোনো মানুষ আমাকে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ পাবে না। অবশ্যই অভিনয়শিল্পী হিসেবে মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের স্বপ্নের মানুষ—তা আমার জন্য ভালো লাগার। কিন্তু যারা বেশির ভাগ সময় আমার চারপাশে ঘুরঘুর করে, সুযোগ নিতে চায়—তারা জানুক আমারও একজন আছে। সম্পর্কের বিষয়ে খোলামেলা থাকার এটাই একটা প্রধান কারণ।
আমার মনে হয়, সম্পর্কের ব্যাপারে যদি খোলামেলা থাকি, অন্য কোনো মানুষ আমাকে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ পাবে না। অবশ্যই অভিনয়শিল্পী হিসেবে মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের স্বপ্নের মানুষ—তা আমার জন্য ভালো লাগার।