খুন নয়, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক সালমান শাহ—পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এমন তথ্যই জানিয়েছে। রোববার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালত মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন। এ সময় মামলার বাদী সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী এই প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দিলেও বিচারক সেটি খারিজ করে দেন।
আবেদন খারিজের পর নীলা চৌধুরী দাবি করেন, সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত না করে আসামিপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করব। আমৃত্যু লড়ে যাব।”
সালমানের মায়ের দাবি, পিবিআইয়ের কাছ থেকে সব কাগজপত্র তিনি পাননি। এরপরও নারাজি দাখিল করেছেন। তিনি অসুস্থ। সালমানের এই ইস্যু নিয়ে তাকে অহেতুক পেরেশানি করা হচ্ছে।
তবে হাল ছাড়বেন না নীলা চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমার ছেলে মারা গেছে ২৫ বছর আগে। সেই থেকে আমরা লড়ে যাচ্ছি। আমার স্বামী বিচার চেয়ে মামলা করেছিলেন, কিন্তু তিনি বিচার দেখে যেতে পারেননি। আমার জীবদ্দশায় এই মামলা বন্ধ হবে না। আমি মরে গেলেও এই মামলা চলবে। কাউকে না কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাব। এত দিন পর্যন্ত সালমানের বিচার নিয়ে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু প্রমাণ করে সালমান শাহ কোনোভাবেই আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম। এর আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
বনজ কুমার মজুমদার জানান, এই মামলার তদন্তকালে ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয় ১০ সাক্ষীর জবানবন্দি। পাশাপাশি ঘটনার সময়ের জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করা হয়। সবকিছু পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সালমান শাহ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। হত্যার যে অভিযোগ তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।