ক্যাম্পাসে সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি, আবরার হত্যা ঘটনায় বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর ক্লাসে ফেরা, মৌলবাদ, শিক্ষার্থীদের নিরপেক্ষ মনোভাবকে বিকৃতভাবে অপপ্রচার ও সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুর বিরুদ্ধে একযোগে শপথ গ্রহণ ও প্রেস ব্রিফিং করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (১৮-১৯) সেশনের শিক্ষার্থী তাসমিয়া তাসমিনের নেতৃত্বে শপথে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা।
শপথবাক্যে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার নিমিত্তে আমার ওপর অর্পিত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব প্রকার দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার জ্ঞাতসারে হওয়া অন্যায় অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমি সর্বদা সোচ্চার থাকব।
এতে আরও বলা হয়, আমি আরও প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রকার সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থানকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেব। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমূলে সমূলে উৎপাটিত করব। এই আঙিনায় আর কোনো নিষ্পাপ প্রাণ যেন ঝরে না যায়, আর কোনো নিরপরাধ যেন অত্যাচারের শিকার না হয়—তা আমরা সবাই মিলে নিশ্চিত করব।
শপথবাক্য পাঠ পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে সাম্প্রতিক বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন তারা। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির চরমতম রূপ বারবার আঘাত হেনেছে বুয়েট ক্যাম্পাসে। ২০০২ সালে থেকে শুরু করে ২০১৯ ছাত্ররাজনীতির অন্ধকার অধ্যায় তার ভয়ঙ্কর দাগ রেখে গেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে ৩৪ শিক্ষার্থীদের আটকের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে একটি সুস্থ ও দ্রুত বিচার আশা করছি। যদি তারা প্রত্যেকে দোষী প্রমাণিত হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের বিপক্ষে থাকবে। একইভাবে যদি তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তবে নির্দোষরা যেন আর কোনোভাবে হয়রানির স্বীকার না হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেষ্ট থাকব এবং বুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করব। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিনা বা তারা ক্যাম্পাসে অন্য শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করছে কিনা এই ব্যাপারে যথাযথ তদন্তে এরূপ কোনো সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয় তবে, ভার্সিটির অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যদি তারা নির্দোষ হয়, তাহলে তারা যেন সুস্থ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে তার দাবি জানানো হচ্ছে।