• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সেই শিক্ষিকার মৃত্যুর রহস্য জানতে চায় স্বজনরা


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২, ০৮:৫৬ পিএম
সেই শিক্ষিকার মৃত্যুর রহস্য জানতে চায় স্বজনরা

অসম প্রেম ও অতঃপর বিয়ে। সবেমাত্র ছয় মাস পার হলো তাদের সংসার। তবে শেষ পর্যন্ত একটি মৃত্যু দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটল তাদের প্রেমের সংসার। বয়সে ২০ বছরের ছোট কলেজছাত্র মামুনকে (২২) বিয়ে করে ভাইরাল হওয়া কলেজ শিক্ষিকা এখন কেবলই ইতিহাস।

বলছি নাটোরের গুরুদাসপুরের খুবজীপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের কথা।

রোববার (১৪ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে পুলিশ আলোচিত ওই সহকারী অধ্যাপকের গলায় ওড়না পেচানো মৃতদেহ উদ্ধার করেছে নাটোর শহরের ভাড়া বাসা থেকে।

এ ঘটনায় স্বামী মামুনকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়েছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সকালে মামুনের উপস্থিতিতে পুলিশ সাংবাদিকদের জানান, ভোর ৪টার দিকে বাইরে থেকে এসে দেখি ঘরের দরজা খোলা। পরে দেখি ওড়না দিয়ে পেচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। ওড়না কাটার জন্য তাৎক্ষণিক ছুরি বা বটি না পাওয়ায় পকেটে থাকা ম্যাচলাইট দিয়ে ওড়নার মাঝখানে পুড়িয়ে লাশ নামিয়েছে সে।

মামুন জানান, তার স্ত্রী বেতন পেতেন ৩৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন জায়গায় ঋণ পরিশোধ করে হাতে থাকত মাত্র আট হাজার টাকা। শনিবার (১৩ আগস্ট) খাইরুন নাহারের আগের সংসারের ছেলে এসে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যান। বাকি তিন হাজার টাকার মধ্যে বাড়িতে ছিল মাত্র এক হাজার টাকা। এসব নিয়ে খাইরুন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।

এ বিষয়ে ওই বাড়ির কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন বলেন, “শনিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় প্রবেশ করেন মামুন। আবার রাত আড়াইটার দিকে বের হন। কেন বের হচ্ছেন- জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। পরে সকাল ৬টায় মামুন আবার ফিরে আসেন।”

তিনি বলেন, “বাসায় ফেরার পর মামুন আমাকে ডাকেন। আমি চার তলায় গিয়ে দেখি, খাইরুন নাহারের লাশ ঘরের মেঝেতে।”

নিহতের ভাই সাবের হোসেন বলেন, “সকালে একটা কল আসে যে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। খবর শুনেই গুরুদাসপুর থেকে ছুটে আসি। এসে দেখি বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ রয়েছে। এতে মনে হচ্ছে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় পরিকল্পিত খুন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।”

নিহত শিক্ষক খায়রুন নাহারের ভাগ্নে নাহিদ হোসেন জানান, আটক স্বামী মামুন একজন নেশাখোর। বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত সে ৫ লাখ টাকা ও একটি পালসার মোটরসাইকেল নিয়েছে। সম্প্রতি ওই মোটরসাইকেল তার ভালো লাগছে না এমন কথা জানিয়ে আরও দামি মোটরসাইকেল চেয়েছে। এ নিয়ে তার খালামনি মানসিক চাপে ছিলেন। এ ছাড়াও সম্প্রতি গুরুদাসপুরে মাদক নিয়ে কিছু বখাটের মধ্যে গোলমাল হয়। ওই ঘটনায় সে আসামি হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে মানসিক, পারিবারিক ও বিভিন্ন চাপে অশান্তিতে ছিলেন তিনি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা নাটোর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দীন বলেন, “জেলা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। আর পিবিআই ওই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। আশা করি খুব দ্রুতই ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে।”

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। দ্রুতই রহস্য উদঘাটন করা হবে।

Link copied!