• ঢাকা
  • সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১০ সফর ১৪৪৬

ভ্যাপসা গরমে নাকাল যাত্রীরা


রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২১, ০৭:৩৫ পিএম
ভ্যাপসা গরমে নাকাল যাত্রীরা

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে দীর্ঘ হয় যাত্রীবাহী বাসের সারি। কঠোর বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের প্রথম দিনে আজ বুধবার (১১ আগস্ট) সকালের পর থেকে এ দৃশ্য দেখা যায়। একদিকে দীর্ঘ যানজট অন্যদিকে ভ্যাপসা গরমে নাকাল হয়ে পড়েন যাত্রীরা।

সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায় রাতে যেসব বাস এসে দৌলতদিয়া প্রান্তে পৌঁছেছিল সেসব বাসের প্রায় ২ কিলোমিটার জট। সকাল ৮টার পরই সেই জট কেটে যায় এবং তখন যাত্রীবাহী সকল বাসই কোনো ভোগান্তি ছাড়াই ফেরিতে উঠে।

তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে পাল্টাতে থাকে দৃশ্য। দীর্ঘ হতে থাকে যাত্রীবাহী বাসের সারি। সেই সঙ্গে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে পণ্যবাহী ট্রাক, কার্গো, কাভার্ডভ্যান এবং পিকআপভ্যান। বর্তমানে দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট হতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশে যাত্রীবাহী বাসের জট রয়েছে। এছাড়া এই মহাসড়কের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং দৌলতদিয়া থেকে ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড়ে ঢাকা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে পণ্যবাহী ট্রাকের জট রয়েছে।

এই তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা।

মেহেরপুর থেকে আসা পায়েল বলেন, “বেলা বারোটার সময় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পৌঁছালেও বিকেল সাড়ে ৫টায় ফেরিতে উঠতে না পারায় প্রচণ্ড অস্বস্তিতে আছি।”

কুষ্টিয়া থেকে আগত বেসরকারি চাকরিজীবী রবিউল বলেন, “বেলা ১টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে পৌঁছাই কিন্তু এখন প্রায় বিকেল ৪টা বাজতে গেল। প্রায় তিন ঘণ্টা আমরা এই যানজটে আটকে আছি।”

গোপালগঞ্জ থেকে আসা বৃষ্টি আক্তার বলেন, “শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ফেরি বন্ধ থাকায় এদিক দিয়ে আসা যাত্রীদের ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে তীব্র যানজটে। আর সেই সঙ্গে এই ভ্যাপসা গরমে বাচ্চাকে নিয়ে বাসের মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বাচ্চাও খুব কান্নাকাটি করছে গরমে।”

পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চালকদের দুর্ভোগ বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা একেকজন প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা একই স্থানে রয়েছে।

কাঁচাপণ্যবাহী ট্রাকের চালকরা অভিযোগের সুরেই বলেন, যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাদেরকে অগ্রাধিকার না দিলে তাদেরকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

এমন একজন ট্রাক ড্রাইভার সিকেন্দার আলি। 

তিনি আলু বোঝাই ট্রাক নিয়ে এসেছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে।

সিকেন্দার আলি বলেন, “শিমুলিয়া-বাংলাবাজারে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঐদিকের সব গাড়ি এখন রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দিয়ে পারাপারের জন্য আসছে। সেজন্য এদিকের যানজটটা বেশি হচ্ছে।”

ঝিনাইদহ থেকে আগত কার্গো ড্রাইভার শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, “বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে এই দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই নৌরুটের ফেরি সংখ্যা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।”

তবে, গাড়ীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের বিপরীতে ফেরি চালাতে গিয়ে দুপুর ২.৩০ এর দিকে ২টি বড় ফেরি বিকল হয়ে যায় বলে জানান, বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতিয়া শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন।

শিহাব উদ্দিন আরও জানান, “সকাল থেকে ১৫টি ফেরি চললেও নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ২টি ফেরি বিকল হয়ে বর্তমানে ১৩ চলাচল করছে।”

Link copied!