রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবন’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। বিশ্বে কম খরচে ব্যতিক্রমী নকশায় নির্মিত ভবন ও ভবনের স্থপতিকে এই পুরস্কারে ভূষিত করেছে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (রিবা)।
গত ২৫ জানুয়ারি রিবা’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নূন্যতম সম্পদের সাহায্যে নির্মিত পরিবেশবান্ধব হাসপাতাল ভবনটি স্থপতি ডেভিড চিপারফিল্ড নির্মিত বার্লিনের একটি গ্যালারি এবং ডেনমার্কে উইলকিনসন আইরি নির্মিত ফুটব্রিজকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে এ পুরস্কার জিতেছে। ছোট ছোট ইটের তৈরি ৮০ শয্যার এই হাসপাতালের নকশা করেছেন স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী।
এছাড়া রিবা এক বিবৃতিতে জানায়, অসাধারণ নকশা ও সামাজিক প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে কাশেফ চৌধুরী ও তার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান আরবানার করা ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল ভবনটিকে এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চালু হয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ২০১৩ সালে নকশা করার পর চার বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। বিশ্বের ১১টি দেশের ১৬টি ব্যতিক্রমী নতুন স্থাপনা থেকে বাছাই করে তিনটি স্থাপনার সংক্ষিপ্ত তালিকা চূড়ান্ত করে রিবা আস্তর্জাতিক পুরস্কারের পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড।
গার্ডিয়ান বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়েই চলেছে। এ কারণে আশপাশের শস্যক্ষেতগুলোতে পানি জমে রূপান্তরিত হয়েছে চিংড়ির ঘেরে। আর ভূপৃষ্ঠ পানীয় এত লবণাক্ত হয়ে উঠেছে যে পান করাসহ বেশিরভাগ কাজেই সেটি ব্যবহার করা যায় না। তাই বর্ষাকালে বিশুদ্ধ পানির সবশেষ ফোঁটাটিও সংরক্ষণের চেষ্টা করেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়টি মাথায় রেখে কাশেফ মাহবুব চৌধুরী এমন একটি ভবনের নকশা করেন যেটি আসলে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার মেশিনে পরিণত হবে। হাসপাতালের প্রতিটি ভবনের ছাদ থেকে এবং চারপাশের আঙিনার সঙ্গে নালার মাধ্যমে খালের সংযোগ করেছেন।
এদিকে গত ১৬ নভেম্বর রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের’ সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সঙ্গে ছিল জার্মানির বার্লিনের জেমস-সায়মন-গ্যালারি এবং ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের লিলে ল্যাঞ্জেব্রো সেতু।
ফ্রেন্ডশিপ এনজিওর সহায়তায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে তোলা এই কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরার হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। উপকূলের এমন একটি এলাকায় এ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছে যা ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এর আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চালু হয়েছে ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ২০১৩ সালে নকশা করার পর চার বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়।