রবীন্দ্রনাথের কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করেছিলেন, তিনি জীবিত। কিন্তু জামালপুরের মাদারগঞ্জে ফটিক মণ্ডল কীভাবে প্রমাণ করবেন যে তিনি জীবিত। তথ্য সংগ্রহকারীর ভুলে শতবর্ষী এই বৃদ্ধ সরকারি হিসাবের খাতায় ‘মৃত’ উল্লেখিত আছেন। ফলে পাচ্ছেন না সরকারপ্রদত্ত বয়স্ক ভাতা।
জানা গেছে, উপজেলার বিনোদটঙ্গী গ্রামের মৃত করজুল্লাহ মণ্ডলের ছেলে মো. ফটিক মণ্ডল। ৬ জুলাই ২০১৮ সালে ফটিক মণ্ডলকে মৃত দেখিয়ে নির্বাচন অফিসে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন বিনোদটঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাহিদা খাতুন। ওই প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসরাত আরা বুলবুল, ইউপি সদস্য নূর ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বাচ্চুর সিল-স্বাক্ষর আছে।
ফটিক মণ্ডলের জামাতা মিলনবাজার গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছর থেকে নগদ অ্যাকাউন্টে বয়স্ক ভাতার টাকা প্রদান শুরু হলে ফটিক মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে টাকা আসেনি। পরে সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানা যায়, তিনি আছেন ‘মৃত’ তালিকায়। ফলে প্রায় এক বছর ধরে শতবর্ষী ফটিক মণ্ডল বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহকারী নাহিদা বেগম জানান, তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি ফটিক মণ্ডলের এক প্রতিবেশীর বাড়িতে বসেছিলেন। ওই প্রতিবেশীরা ফটিক মণ্ডল মারা গেছেন বলে তাকে জানিয়েছিল।
কড়ইচুড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নূর ইসলাম জানান, তিনি ফটিক মণ্ডলের মৃত্যুসংক্রান্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেননি। তিনি আরও জানান, তার সিল বিনোদটঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকে। হয়তো কেউ জাল স্বাক্ষর দিয়ে ফটিক মণ্ডলকে মৃত দেখিয়ে অন্যজনকে কার্ডটি দিয়েছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার জামান হোসেন চৌধুরী জানান, তথ্য সংগ্রহের জন্য মৃত ব্যক্তির এনআইডি নাম্বারের একটি ডিজিট ভুল হলে অন্য জনের নাম আসে। সেভাবেই হয়তো জীবিত ফটিক মন্ডল মৃতের তালিকায় এসেছে।