• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চিরনিদ্রায় শায়িত জয়নাল হাজারী


ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২১, ০৬:২৪ পিএম
চিরনিদ্রায় শায়িত জয়নাল হাজারী
ছবি: সংবাদ প্রকাশ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন হাজারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফেনী পাইলট হাই স্কুল মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে শহরের মাস্টারপাড়ার মুজিব উদ্যানে দাফন করা হয়। 

এর আগে দুপুর ৩টার দিকে জয়নাল আবেদীন হাজারীর মরদেহবাহী ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স ফেনীতে এসে পৌঁছায়।

এ সময় প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে তাঁর ফেনীর মাস্টারপাড়ার হাজী আবদুল গনি হাজারী বাড়ির সামনে ভিড় করেন দলের নেতাকর্মীরা। এরপর নেওয়া হয় তাঁর বাড়ি শৈলকুঠিরের মুজিব উদ্যানে। সেখানে সর্বসাধারণ তাঁঁকে শেষবারের মতো দেখেন। 

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদানের পর ফেনী পাইলট মাঠে নেওয়া হয়। সেখানে বিকেল সাড়ে ৪টায় তার জানাজা হয়।

জানাজার আগে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবদীন ভিপি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান।

জাতীয় সংসদের হুইপ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, “আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারী জননেতা জয়নাল আবেদীন হাজারী ছিলেন গণমানুষের নেতা। বর্তমানের যারা আওয়ামী রাজনীতি করেন, তাদের অনুপ্রেরণা জয়নাল হাজারী। তাঁর শূন্তায কখন পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর জানাজায় মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে তিনি ছিলেন জনগণের নেতা। মানুষের হৃদয়ে তিনি স্থান করে নিয়েছেন।”

নামাজে জানাজায় অংশ নেন ফেনীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল বশর মজুমদার তপন, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট হাফেজ আহম্মদ, পরশুরাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আহমেদ রিয়াদ আজিজ রাজীব, জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আশ্রাফুল আলম গিটার, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম সালাহ উদ্দিন ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সমাজের বিশিষ্টজন, দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ। জানাজানা পরিচালনা করেন জহিরিয়া মসজিদের খতিব মো. ইলিয়াছ।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানী ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে জয়নাল আবেদীন হাজারী ইন্তেকাল করেন। একাধিক শারীরিক জটিলতা নিয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

জয়নাল হাজারী ছিলেন চিরকুমার। ফেনীর মাস্টারপাড়ায় তার একটি বাড়ি রয়েছে। তার মৃতদেহ সেখানে আনার কথা রয়েছে। মাস্টারপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে। 

এর আগে ১৯৮৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জয়নাল হাজারী। এছাড়া ফেনী-২ (ফেনী সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন আলোচিত এই নেতা।

২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১৬ আগস্ট রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। তখন তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। পরে ২০০৪ সালে হাজারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তিনি ভারত থেকে দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তার বিরুদ্ধে করা একে একে সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ। 
 

Link copied!