• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ সফর ১৪৪৬

লোকজ উৎসবে মেতেছে টাঙ্গাইলবাসী


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
লোকজ উৎসবে মেতেছে টাঙ্গাইলবাসী

টাঙ্গাইলে তিন দিনব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের পক্ষে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান। উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সোহেল রানা।

উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল কালচারাল রিফরমেশন ফোরামের উপদেষ্টা হামিদুল হক ওরফে মোহন ও গোলাম আম্বিয়া নূরী, উৎসব কমিটির সদস্য সচিব অনিক রহমান ওরফে বুলবুল।

উদ্বোধনের পর উৎসব প্রাঙ্গণে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা ও হাডুডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়। নানা বয়সী মানুষ ঐতিহ্যবাহী এ খেলা দেখতে আসেন। উৎসবে ৪২টি স্টলে দেশীয় ঐতিহ্য ভাপা পিঠা, দুধের পিঠা, নকশি, চিতই, পাঠিসাপটা, জামাই বরণ পিঠা, ডাল ও তালের পিঠাসহ বাহারী পিঠা স্থান পেয়েছে।

মেলা প্রাঙ্গণে ঢেঁকিতে চাল ছাটা, মুড়ি ভাজা, পুঁথিপাঠসহ গ্রামীণ বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। বিকেলে উৎসব মঞ্চে জারিগান ও লালন সংগীতের আয়োজন করা হয়।

মেলায় আগত স্কুলছাত্র সামি সিকদার বলেন, “প্রায় প্রতিদিন মুড়ি খাই। কিন্তু কীভাবে মুড়ি ভাজা হয় তা কখনো দেখি নাই। আজ এই উৎসবে এসে মুড়ি ভাজা দেখতে পেলাম। খুব ভালো লাগছে।”

উৎসবে লাঠি খেলা দেখে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী নুরুল ইসলাম বলেন, “ছোট বেলায় লাঠি খেলা দেখতাম। এখন আর লাঠি খেলা দেখা যায় না। অনেক বছর পর গ্রাম বাংলার লাঠি খেলা দেখে ভালো লাগল। এ খেলা দেখে শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম।”  

উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম মোস্তফা লাবু বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে লোকজ সংস্কৃতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। যান্ত্রিক যুগে মোবাইল ফোনের কারণে শিশুরা লোকজ ও সাংস্কৃতিক থেকে একেবারে দূরে সরে গেছে। লোকজ সংস্কৃতি কী, শিশুরা তা জানে না। সম্প্রতি অভিভাবকের কাছে জানতে পারলাম, শিশু তার বাবাকে প্রশ্ন করেছে মুড়ি কোন গাছে হয়। মুড়ি যে গাছে হয় না, শিশুর এমন প্রশ্ন দোষের না। কারণ শিশুরা মাঠে-ঘাটে খেলাধুলার বাস্তবতা থেকে অনেকটাই দূরে। সেই অনুভব থেকে আমরা এ রকম লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসবের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ লোকজ ও সংস্কৃতি আগত ও বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।”

উৎসব কমিটির সদস্য সচিব অনিক রহমান বুলবুল বলেন, “আগামী শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। এতে লাঠি খেলা, ছেলে ও মেয়েদের হাডুডু খেলা, সঙযাত্রা, যাদু প্রদর্শন, যাত্রাপালা, পুঁথিপাঠ, লোকজ গান, গোল্লাছুট, ওপেন টু বাইস্কোপ, হামদ, নাথে রাসুল, কীর্তন, শ্যামা সংগীতসহ দেশজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।”

Link copied!