• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আউশের মৌসুমে বোরো আবাদে সাফল্য


হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৩, ০৮:৩৫ এএম
আউশের মৌসুমে বোরো আবাদে সাফল্য

আউশ ধানের মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডা. শফিকুল ইসলাম। এ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে ভালো ফলনও পেয়েছেন তিনি। ডা. শফিকুল ইসলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

জানা যায়, আউশের মৌসুমে বোরো আবাদ করলে একই জমিতে বছরে তিনবার ধান আবাদ করা যায়। অন্যদিকে এ মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা যেমন নেই, তেমনি সেচ ও সারের ব্যবহার কম হওয়ায় খরচ কমিয়ে আনা যায় অর্ধেকে। যে কারণে অধিক লাভবান হয়েছেন ডা. শফিকুল ইসলাম। তার সাফল্য দেখে ওই গ্রামের অনেক কৃষক এখন আউশের মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছেন।

ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আউশের মৌসুমে চার বছর আগে নিজের ২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বোরো ধানের চায়না গোল্ডেন-১ ও দেশীয় ২৮, ২৯ ধান চাষ শুরু করি। আবাদের প্রথম বছরই ব্যাপক সফলতা পায়। এরপর থেকে প্রতিবছরই আউশের মৌসুমে বোরো ধান চাষ করে আসছি। এ বছর ৬ বিঘা জমিতে দেশীয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ চাষ করেছি। আউশের মৌসুমে প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় বোরো ধানের ফলন হয় অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে সেচের পানি আর সারের ব্যবহার কম হওয়ায় ধান চাষে তুলনামূলক খরচের পরিমাণ নেমে আসে অর্ধেকে। এ পদ্ধতিতে একই জমিতে বছরে তিনবার ধান চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছি। দামও ভালো পাওয়া যায়।” 

ডা. শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সারা দেশে এ পদ্ধতিতে ধান চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষক যেমন অধিক লাভবান হবেন, তেমনই খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে সারা দেশেই এ পদ্ধতিতে ধান চাষ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, “আউশ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন  ডা. শফিকুল ইসলাম। এক জমিতে বছরে তিনবার ফলনও পেয়েছেন তিনি। তার দেখাদেখি আমরাও এখন দেশীয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ ধান চাষ করছি। ফলনও খুব ভালো হচ্ছে, দামও ভালো।”

স্থানীয় কৃষক জামাল মিয়া বলেন, “ডা. শফিকুলের পরামর্শে গত বছর আউশ মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে দেশিয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ ধান চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ৩০ মণ করে ধান পেয়েছি। এ ছাড়া বছরে একই জমি তিনবার ধান চাষ করা যায়। চলতি মৌসুমে আবাদ করেছি। আশা করছি, গত বছরের মত এবারও ভালো ফলন পাব। দামও ভালো পাওয়া যাবে। কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করলে আবাদের পরিমাণ আরও বাড়াব।”

আরেক কৃষক কাশেম মিয়া বলেন, “আউশের মৌসুমে বোরো ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন ডা. শফিকুল। ধান অনেক ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করলে আমিও আগামীতে এ ধান চাষ করব। এভাবে সবাই ধান চাষ করলে খাদ্যের কোনো ঘাটতি থাকবে না। দামের দাম বৃদ্ধি পাবে না।”

মধুপুর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ডা. শফিকুল ইসলাম আউস মৌসুমে দেশীয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ বোরো ধানের জাত আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষকও এই ধানের জাত আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, ডা. শফিকুল ইসলাম আউশ ধানের মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে ভালো সাড়া জাগিয়েছেন।

Link copied!