• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘কাঠের মাইক্রো’ তৈরি করেছেন শামসুদ্দিন


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ০২:০৭ পিএম
‘কাঠের মাইক্রো’ তৈরি করেছেন শামসুদ্দিন

দীর্ঘ ছয় মাসের চেষ্টায় কাঠ দিয়ে চার চাকার একটি পূর্ণাঙ্গ ‘কাঠের মাইক্রো’ তৈরি করেছেন শামসুদ্দিন মণ্ডল (৫০) নামের এক কাঠমিস্ত্রি। এরই মধ্যে দৃষ্টিনন্দন এই গাড়ি সবার নজর কেড়েছে। এর আগেও তিনি কাঠের তৈরি মোটরসাইকেল বানিয়ে সাড়া জাগিয়েছেন এলাকায়।

শামসুদ্দিন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের দেলুয়াবাড়ি সরদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ভালো না হওযায় দ্বিতীয় শ্রেণির বেশি লেখাপাড়ার সুযোগ হয়নি তার। দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে কাজ করছেন কাঠমিস্ত্রির।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠ দিয়ে তৈরি গাড়িটি অনেকটা ‘মাইক্রো’ আদলে তৈরি। গাড়িটির পুরো বডি কাঠের তৈরি। এটি চলছে বৈদ্যুতিক চার্জে। চালকসহ পেছনে বসার জন্য দুটি আসন রয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানিসাশ্রয়ী এ গাড়িটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪৯ হাজার টাকা। বর্তামানে গাড়িটিতে লাগানো আছে ১২০ এমপিআর একটি পুরাতন ব্যাটারি। একবার চার্জ দিলে চলছে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। তবে চারটি নতুন ব্যাটারি লাগানো গেলে এক চার্জে সারা দিন চালানো যাবে।

শামসুদ্দিন মণ্ডল জানান, রাস্তায় বিভিন্ন যাহবাহন চলাচল করতে দেখে ভাবতেন কীভাবে নিজে গাড়ি তৈরি করবেন। এরপর একদিন শখের বশে বাজার থেকে কাঠ কিনে নিয়ে আসেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে শুরু করেন গাড়ি বানানোর কাজ। ছয় মাসের মধ্যে গাড়িটি বানানো শেষ হয়। এই কাজে তাকে কেউ সহযোগিতা করেনি। গাড়িটির চাকা ও এক্সেল ছাড়া সব জায়গাতে ব্যবহার হয়েছে কাঠ। গাড়ি বানাতে খরচ হয়েছে ৪৯ হাজার টাকা। তবে এখনো বাকি আছে রঙের কাজ।

শামসুদ্দিন বলেন, প্রথম দিনে গাড়ি নিয়ে যখন রাস্তায় বের হন তখন খুবই ভালো লাগছিল। প্রথম দিন থেকে এখনো গাড়িটি নিয়ে বের হলে সবাই দেখতে ভিড় করে। অনেক সময় বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে চলে আসেন। সবাই প্রশংসা করে। গাড়ি দেখতে এসে কেউ যেতে চায় না। গাড়ির সঙ্গে সবাই ছবি তোলে। সরকার সহযোগিতা করলে এর চেয়ে আরও উন্নত গাড়ি বানাতে পারবেন তিনি।

পরিবেশবান্ধব এই ‘কাঠের মাইক্রো’ নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কোনো কাজে বের হলে নজর কাড়ছে পথচারীদের। এক নজর দেখার জন্য গাড়ির চারপাশে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। কেউ কেউ আবার এ গাড়িটির সঙ্গে নিজের ছবি তুলে রাখছেন মোবাইল ফোনে।

স্থানীয়রা জানান, কাঠ দিয়ে যে এত সুন্দর গাড়ি বানানো যায় এর আগে কখনোই তারা দেখননি। দেখে খুব ভালো লাগলো। তার মেধার প্রশংসা করতে হয়। এই গাড়িটি দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। দেখার মতো। একজন কাঠমিস্ত্রি হয়ে, সে কীভাবে এত সুন্দর গাড়ি বানালো। সরকার থেকে তাকে সহযোগিতা করা হলে ভবিষ্যতে সে আরও ভালো মানের গাড়ি বানাতে পারবে।

কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওফেল আলী মন্ডল জানান, নিজের প্রচেষ্টায় কাঠ দিয়ে পরিবেশ বান্ধব এমন গাড়ি তৈরি করায় আসলেই প্রশংসার দাবিদার তিনি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!