রাজশাহী নগরীর গণকপাড়ায় টাইগার সংঘ এ বছর বাংলাদেশ ডাক ভবনের আদলে পূজামণ্ডপ তৈরি করেছে। নান্দনিক এ মণ্ডপ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন নগরীর মানুষ। মণ্ডপে রাখা হয়েছে অনেক গুণী মানুষের হাতের লেখা চিঠিও। রয়েছে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রসহ ডাকটিকিট।
রাজশাহী নগরীর গণকপাড়ায় টাইগার সংঘ কয়েক বছর ধরে ব্যতিক্রমী থিমে নিজেদের পূজামণ্ডপ তৈরি করছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, বাহুবলী, আইয়ুব বাচ্চুর রুপালি গিটার, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, করোনাকালে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কের আদলে কিংবা বিশ্বকাপের ট্রফিতে তাদের মণ্ডপ তৈরি করেছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর সরেজমিনে দেখা যায়, গণকপাড়ায় টাইগার সংঘ ঢাকায় আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ভবনের আদলে মণ্ডপের ওপরের অংশ তৈরি করেছে। নিচে বোর্ডে সাঁটানো রয়েছে চিঠি, খাম, নিমন্ত্রণপত্র ও ডাকটিকিট। একই সঙ্গে মণ্ডপের সামনে রাখা হয়েছে ডাকবাক্স। মণ্ডপের সামনেই হারিকেন হাতে রানারের প্রতিকৃতি সবার নজর কেড়েছে।
মণ্ডপ ঘুরতে আসা দর্শনার্থী গীতা রানী বলেন, “প্রতিবছর টাইগার নতুন কিছু আমাদের উপহার দেয়। এ বছরও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। শনিবার ও রোববার বিকেল পর্যন্ত দুই দিনে ১৬টি মণ্ডপ ঘুরেছি। তার মধ্যে টাইগারের ডাক ভবন ভালো লেগেছে। প্রতিবছরই এদের মণ্ডপ ভালো লাগে।”
দর্শনার্থী অমল কুমার বলেন, টাইগার মণ্ডপ মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। বরাবরই করে। কারণ তারা নতুন আইডিয়ায় ভিন্ন থিমের ওপরে মণ্ডপের নকশা করে, যা সবাইকে অবাক করে। এ বছরও সবাইকে অবাক করেছে। রাজশাহীতে এমন থিমের মণ্ডপ আর কোথাও নেই। টাইগার সংঘের থিমটি ভালো লেগেছে সবার। তরুণ প্রজন্ম আগের দিনের চিঠির ইতিহাস কিছুটা হলেও জানতে পারবে।
পূজামন্দির সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ছাড়াও ২৪টি চিঠি রয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৯ সালে মওলানা ভাসানীকে একটি চিঠিতে সে সময়ের দেশের কথা তুলে ধরেছেন। রয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়ের হাতে লেখা চিঠিও। চিঠিগুলো মণ্ডপের সামনে রাখা হয়েছে। ঢুকতেই দুই পাশে রাখা হয়েছে ঐতিহাসিক ডাকটিকিটের ছবি। ডাকটিকিটগুলোতে গ্রামবাংলার চিত্র ছাড়াও দেশের নানা সাফল্য উঠে এসেছে।
টাইগার সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল বলেন, “একসময় চিঠির ব্যাপক আদান প্রদান ছিল। এই প্রজন্ম চিঠি বা ডাকঘর চেনে না। ডাক থেকে এক সময় সরকার রাজস্ব আয় করতো। কিন্তু এখন কুরিয়ার সার্ভিসের মধ্যে ঝুঁকে গেছে সবাই। আমাদের প্রত্যাশা পুরানো কিছু আবার নতুন করে সবার সামনে তুলে ধরা।”