চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে আয়োজিত এক কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলনে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান—জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে বসা একজন বক্তা দুই হাত উঁচু করে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান’ স্লোগান দেন এবং সামনে উপস্থিত দর্শকেরা সমস্বরে ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান। কিছুক্ষণ পর তিনি ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগানও ধরেন, সেখানেও দর্শকরা একইভাবে কণ্ঠ মেলান। এরপর তিনি ‘নারায়ে তাকবির’ বলে স্লোগান তোলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা সাউথ সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় নুরনবি রুমি নামের এক অংশগ্রহণকারী নিশ্চিত করেছেন, এটি ছিল আন্তর্জাতিকমানের কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলন, যেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেন।
রুমি জানান, পাকিস্তান থেকে আগত একজন ইসলামি বক্তা মঞ্চে ওঠার পর অনুষ্ঠানের একজন সঞ্চালকই এমন স্লোগান দেন। একইভাবে অন্যান্য দেশের বক্তাদের ক্ষেত্রেও তাদের দেশের নামে স্লোগান দেওয়া হয়।
একই অনুষ্ঠানের আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মিসর থেকে আসা এক তিলাওয়াতকারীর জন্য ‘মিসর জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এতে স্পষ্ট হয় যে, আসলে প্রতিযোগী যে দেশের, তার নামেই স্লোগান তুলছিলেন সঞ্চালক।
ভিডিওটি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোলায়মান বাদশা বলেন,
“‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার সাহস দেখানো দুঃসাহস। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলতে চাই—এ ধরনের স্লোগান কখনোই বরদাশত করব না।”
সন্দ্বীপের ইউএনও মংচিংনু মারমা বলেন, “ভিডিওটি এখনো দেখিনি। কেউ আমাকে জানানিওনি। তবে যদি সত্য হয়—নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
সন্দ্বীপ থানার ওসি এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরীও জানিয়েছেন, “ঘটনা সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য পাইনি। কেউ যদি অভিযোগ করেন বা এরকম কিছু ঘটেই থাকে—আমরা তদন্ত করব।”
আয়োজক সাওতুল কোরআন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফেজ তাওহিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তথ্যসূত্র: প্রথম আলো








































