যশোরের শার্শা উপজেলাজুড়ে হঠাৎ গরুর ক্ষুরা ও পক্স রোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে খামার ও কৃষকের প্রায় এক হাজার গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু গরু মারাও গেছে। আতঙ্কিত হয়ে বড় বড় গরু কম দামেই মাংস ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন খামারিরা। আক্রান্ত গরু কম দামে কিনে রাতের আঁধারে কেটে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ।
উপজেলার একাধিক ছোট-বড় খামারি জানান, খামারের বেশির ভাগ গরুর সারা গায়ে ক্ষত ও ঘা হচ্ছে। গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। আক্রান্ত গরু খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। কিছুদিন পর মারা যাচ্ছে। বেশি মারা যাচ্ছে বাছুর ও গাভী। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে ক্ষুরা রোগও।
উলাশি গ্রামের খামারি আল আমিন বলেন, “দুই দিনে আমার দুটি গাভী মারা গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা। খামারের বাকি গরু নিয়ে চিন্তায় আছি।”
খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, “খামারে ১২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে আমার মোট আটটি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুগুলোর চিকিৎসা চলছে।”
উপজেলার প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় গরু রয়েছে ৯ হাজার ৯৮৫, ছাগল ১০ হাজার ৮৩০, ভেড়া ৫৫টি। উপজেলার অনেক গ্রামে গরু পক্স, ক্ষুরাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অনেকে সরকারি অফিসের পশু ডাক্তারের কাছে আসেন না। যার মূল কারণ সাধারণ মানুষ ও খামারিদের অসচেতনতা। অনেক খামারি স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে পশুর চিকিৎসা করান। যার অধিকাংশ চিকিৎসা ভুল। এমন ভুল চিকিৎসায় অনেক গরু মারা যায়।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. রুবাইয়াত ফেরদৌস বলেন, এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তিন মাসে প্রায় ১২ হাজার গরু-ছাগলের বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। খামারিসহ সাধারণ মানুষকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে। শার্শায় পশু চিকিৎসায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ১৬টি উঠান বৈঠক করা হয়েছে।
ডা. রুবাইয়াত ফেরদৌস আরও বলেন, সাধারণ কৃষক ও খামারিরা পশু হাসপাতালে না এনে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে পশু চিকিৎসা করান। এরপর যখন দেখেন পশু মরার পথে, তখন হাসপাতালে আনেন। মানুষের মতো পশু যখন অসুস্থ হবে তখনি হাসপাতালে আনতে হবে।