গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় তাতিসুতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মাণকাজ চলছে। স্কুলের ভবন নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদারকে ফোন করে নিজের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কথা বলেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা।
তাদের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) অডিও রেকর্ডটি গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে কাছে আসে। তিন দিন আগে ফোন কলে ঠিকাদারকে হুমকি দেন ওই বিএনপি নেতা। তার সঙ্গে সমন্বয় না করে যেন কোনো কাজ না করা হয় বলে শাসিয়েছেন তিনি।
ওই ঠিকাদারের নাম ফরহাদ মোড়ল। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাজী ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ভবন নির্মাণকাজ চলছে। ফরহাদ উপজেলার সোনাকর গ্ৰামের বাসিন্দা। অন্যদিকে বিএনপি নেতার নাম মামুন মিয়া। তিনি শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে ছয় নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
অডিওতে মামুন মিয়াকে বলতে শোনা যায়, `আমি ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আপনি কাজ করবেন, শ্রীপুরের লোকেরে টেহা খাওয়াইবেন, তাইলে আমরা কী করমু।`
কথোপকথনের এক পর্যায়ে মামুন বলেন, `আপনে একটা কাজ করবেন, আমরা বিএনপি করি, আমার ব্যবসা পর্যন্ত নাই, নিছে গা, বাড়িঘরে মানুষ জখম কইরালাইছে। হেয় বিএনপি করে, হেয় আবার আমনের লগে ব্যবসা করে কেমনে, আমনের লগে পার্টনার হয় কেমনে। এইডা কোন ধরনের কথা।`
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অডিওর এই অংশে মামুন মিয়া ঠিকাদারের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে কাজ করা মোতাহার কাজীকে ইঙ্গিত করেছেন। মোতাহার কাজী নির্মাণাধীন স্কুলটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া তিনি বিএনপির কর্মী।
ছড়িয়ে পড়া অডিওর শেষ অংশে মামুন আরও বলেন, “আমি হেরে বলছি, আমার লগে সমন্বয় কইরা কাজ ধরবেন, না হইলে কাজ ধরবেন না, সমস্যা আছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন মিয়া বলেন, আমার বাড়ির পাশে স্কুলের নির্মাণকাজ হচ্ছে। এক কোটি ৩০ লাখ টাকার কাজ। এই স্কুলে ভালোভাবে কাজ করতে বলেছি। ছাদ ধসে পড়লে সবারই সমস্যা। এসব বিষয়ে আমি ১৫ মিনিট কথা বলছি। ১৫ মিনিটের কথা এডিট করা হয়েছে।
ঠিকাদার ফরহাদ মোড়ল বলেন, “আমাকে তার (মামুন) সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলেছেন। না হলে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।”
বরমী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন ফকির বলেন, “এমন একটি বিষয় শুনেছি। তবে কোনো অন্যায়কে সমর্থন করি না। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”