পাবনার আটঘরিয়ায় দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংঘর্ষে বিএনপি ও জামায়াতের অফিস এবং ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনা উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, দেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য কলেজ থেকে তফসিল ঘোষণা করা হয়। অভিভাবক সদস্য মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন দুপুরে আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আছিম উদ্দিন অভিভাবক সদস্য পদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। তার সাথে আরও দুজন বিএনপি সমর্থিত অভিভাবকও মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। কিছুক্ষণ পর জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির নকিবুল্লাহ, সাবেক আমির নাসির, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালিউল্লাহসহ বেশকিছু নেতা-কর্মী গিয়ে তাদের মনোনীত একজনের মনোনয়নপত্র চান। এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। এসময় জামায়াতের একজন মারধরের শিকার হন। এ খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা দেবোত্তর বাজারে জড়ো হন। বিকেলে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দেবোত্তর বাজারে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এ সময় দেবোত্তর বাজারে বিএনপি অফিস ও আশপাশের কমপক্ষে ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উভয় পক্ষের কয়েকজন কমবেশি আহত হন।
এদিকে সন্ধ্যার পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। অফিস কক্ষে আগুন দেয়। পরে আটঘরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে বিএনপির মামুন (৪২), কামরুল ইসলাম (৩৮), আছিম উদ্দিন (৫৫), রতন মোল্লা (৩৮) ও জামায়াতে ইসলামীর সাইদুল ইসলামের (৪২) নাম জানা গেছে। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘উভয় পক্ষের অফিস ভাঙচুর হয়েছে। কিছুটা সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’