• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দুর্ঘটনা বাড়ছে সাজেক সড়কে


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৩, ০৯:৩৯ এএম
দুর্ঘটনা বাড়ছে সাজেক সড়কে

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরপুর মেঘের রাজ্য নামে খ্যাত বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্পষ্ট সাজেক ভ্যালি। উঁচু নিচু পাহাড়ে মেঘের সারি এবং সবুজ আকাশের অপূর্ব দৃশ্য সহজেই আপনার হৃদয়কে গলিয়ে দেবে। অনেকের মতে এটা বাংলাদেশর ভূস্বর্গ।

সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। এর আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে সাজেক ভ্যালির উচ্চতা ১৮০০ ফুট। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা। তবে সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি জেলার মধ্যে দিয়ে। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক সড়কের ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি সরু রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জিপ, ২০০ মাহিন্দ্রা, ১৫০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অসংখ্য মোটরসাইকেল আসা-যাওয়া করে। তবে ফিটনেসবিহীন, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতিতে এ আঁকাবাঁকা সড়কে  প্রতি মাসে ৪-৫ বার দুর্ঘটনা ঘটে। এতে পর্যটক, চালক ও স্থানীয়রা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।  

সাজেক থানা সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ৩০ বারের বেশি দুর্ঘটনা ঘটে এবং ৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয়দের দাবি, দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা পুলিশের তথ্যের চেয়ে বেশি। সর্বশেষ ৩ মার্চ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে এ সড়কে দুর্ঘটনায় ২ জন প্রাণ হারান এবং ২০ জন আহত হন।

সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল আলম জানান, “সম্প্রতি সাজেক সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। আমরা ৩-৪ মাস আগে জেলা প্রশাসক এবং সেনা বাহিনীর সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেছি। মূলত ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পাহাড়ি আঁকা বাঁকা রাস্তায় অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।”

ওসি আরও বলেন, “আমরা সম্প্রতি কিছু নিয়ম চালু করেছি। সাজেকগামী সবগুলো গাড়ি বাঘাইহাটে থামতে হবে। তারপর নির্দিষ্ট স্টপেজ পয়েন্টে পৌঁছালেই আবার যাত্রা শুরু করবে। এভাবে এক ধারের রাস্তা অনুসরণ করলে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে।”

সাজেক জিপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেবনাথ জানান, সাজেক সড়কে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে। একটি সরু ও এক লাইনের রাস্তা, দ্বিতীয়টি আঁকাবাঁকা রাস্তা এবং অন্যটি রাস্তার পাশের গাছ। যার ফলে একটু এদিক সেদিক হলে ঘটে যায় দুর্ঘটনা।

বাঘাইহাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে চান্দের গাড়ি অর্থাৎ জিপ এবং বাইক অন্যান্য যানবাহনের মধ্যে। এখানে স্থানীয় ড্রাইভাররা পেশাদার নয়।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, “সাজেকে পর্যটন কেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে পর্যটক আসা দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। আমরা প্রায় সময় সড়ক দুর্ঘটনার খরব পাচ্ছি। তবে আমি মনে করি এই দুর্ঘটনা রোধ করতে সড়কটি আরও প্রশস্ত করা জরুরি।”

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এ জেলা থেকে সড়কে যাতায়াত সম্ভব নয়। খাগড়াছড়ি থেকে অনুসরণ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রক্ষায় আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি।”

Link copied!