• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ মুহররম ১৪৪৬

মা-ছেলে অপহরণ: পুলিশ সুপারসহ আসামি ৯


রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১, ০৩:৪১ পিএম
মা-ছেলে অপহরণ: পুলিশ সুপারসহ আসামি ৯

দিনাজপুরে অপহরণ করে মুক্তিপণের ঘটনায় রংপুর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মামলা হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে।

এরআগে বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে অপহরণের শিকার চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেরাই সালেমান শাহ পাড়া এলাকার বাসিন্দা লুৎফর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত ফসিহ উল আলম পলাশ।

এতে রংপুর সিআইডির সহাকারী পুলিশ সুপার সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসানুল হক, মাইক্রোবাস চালক হাবিব, নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার ফসিহ উল আলম পলাশসহ ৯ জনের নাম রয়েছে। এছাড়াও আরও অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এরইমধ্যে মামলা ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত সোমবার রাতে ৮/১০ জনের একটি টিম লুৎফরের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের সদস্য ও র‌্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বাড়ির আলমারি, সুটকেস, ড্রয়ারসহ বিভিন্ন স্থান তছনছ করে। পরে তারা লুৎফর রহমানকে না পেয়ে স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ করলে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়নি বলে জানানো হয়। রাতের অপহরণকারীরা জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল থেকে স্বজনদের কাছে ফোন দিয়ে মুক্তিপণের ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। রফাদফা না হওয়ায় শেষে অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা দাবি করে নয়তো আটককৃত মা ও ছেলেকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি চিরিরবন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করে এবং সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা অপহরণকারীদেরকে ৮ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার অপহরণকারীরা তাদেরকে প্রথমে চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকায় যেতে বলেন। টাকা নিয়ে রানীরবন্দর এলাকায় পৌঁছালে আবারও তাদেরকে দশমাইল এলাকায় আসতে বলেন। স্বজনরা দশমাইল এলাকায় গেলে সেখান থেকে তাদেরকে হাজি দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাশেরহাট এলাকায় অপেক্ষায় থাকতে বলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে অপহরণকারীরা তাদের কাছে মাইক্রোবাসে এসে টাকা দাবি করেন। এ সময় ওত পেতে থাকা পুলিশ সদস্য ও স্থানীয়রা অপহরণকারীদেরকে আটক করে প্রথমে চিরিরবন্দর থানায় নিয়ে যান। পরে অপহরণকারী ও উপহৃতদের নিয়ে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার মূলহোতা পলাশকে আটক করেন। বিকেলে ৫ জন আসামিকে দিনাজপুর আমলি আদালত-৪ এ হাজির করা হয়। এতে বিচারক শিশির কুমার বসু তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় আসামি পলাশ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেন। উদ্ধার হওয়া মা জোহরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরের জবানবন্দীও গ্রহণ করেছেন আদালত।

Link copied!