• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আহমেদাবাদে দুই ফাইনালিস্টের ওঠে আসার গল্প


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৪:১৮ পিএম
আহমেদাবাদে দুই ফাইনালিস্টের ওঠে আসার গল্প
রোহিত শর্মা ও প্যাট কমিন্স । ছবি: সংগৃহীত

ভারত-অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ফাইনালে যাওয়ার গল্পদীর্ঘ দেড়মাসের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সফর শেষ হতে যাচ্ছে ১৯ নভেম্বর। যে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল আহমেদাবাদে এরপর আরও নয়টি ভারতীয় রাজ্য ঘুরে শেষের জন্য আবারও ফিরল সেই আহমেদাবাদে। দশটি দল নিয়ে যা যাত্রাটা শুরু হয়েছিল একে একে সবাইকে দেশের বিমানের টিকিট ধরিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে রয়েছে স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। সোনালি ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরার জন্য মুখিয়ে আছে এই দুই দলই। এবার জিতলে ভারত হবে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন আর অজিদের মিশনটা হেক্সা জয়ের।

ফাইনালে আসার পথটা কেমন ছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার জন্য? এক ম্যাচ খেলে আরেক ম্যাচের জন্য উড়াল দিতে হয়েছে আরেক রাজ্যে। তাদের ঘুরে বেড়ানোর সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছে তাদের ভাগ্যটাও। একটা করে ম্যাচ শেষ হয়েছে আর ম্যাচ জয়ের পর ডানা মেলেছে স্বপ্ন বিশ্বজয়ের। আসরের পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সামনে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। যারা এবারের আসরে অপরাজেয়। সব মিলে দশ ম্যাচে দশটিতেই জয় তাদের। 

বিশ্বকাপের এটি ১৩তম আসর। এর ভিতরে অষ্টমবারের মতো ফাইনালে ওঠেছে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে সাতবার ফাইনাল খেলে পাঁচবারই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে অজিরা। এবার তাদের সামনে হেক্সা জয়ের মিশন। তবে, ফাইনালে আসা তাদের গল্পটা খুক একটা সুখকর ছিল না। 

প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ে ভারতের কাছেই ৬ উইকেটের হার দিয়ে শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ মিশন। পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পাত্তাই পাননি প্যাট কামিন্সরা। ১৩৪ রানের পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেতে হয় তাদের।

এখানেই শেষ। এরপরই যেন পাল্টে যায় অস্ট্রেলিয়া। কোন জাদুর কাটির ছোঁয়ায় জিততে থাকে একের পর এক ম্যাচ। শুরুটা শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে। এরপর একে একে বেঙ্গালুরুতে পাকিস্তানকে ৬২ রানে, দিল্লিতে নেদারল্যান্ডসকে ৩০৯ রানে, ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডকে ৫ রানে, আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডকে ৩৩ রানে হারায় পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

এরপর পুনেতে আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে হারানোর পর পেয়ে যায় সেমিফাইনালের টিকিট। পরে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শেষ চারে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকিটটা নিজেদের করে নেন  অ্যালান বোর্ডার-স্টিভ ওয়াহ-রিকি পন্টিংয়ের উত্তরসূরিরা।

অন্যদিকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দারুণ ক্রিকেট খেলছে ভারত। এক কথায় দলটি উড়ছে। বিশ্বকাপে তাদের জয়রথ থামাতে পারেনি কেউই। টানা দশ ম্যাচ খেলে দশটিতেই জয় পেয়েছে তারা। অপরাজিত হয়েই ফাইনালের মঞ্চে পা রেখেছে তারা। অতীতে তিন বার ফাইনাল খেলে ভারত। যেখানে ১৯৮৩ ও ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা কপিল দেব ও মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে। আর ২০০৩এ অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে সোনালি ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরা হয়নি। এবার সেই অস্ট্রেলিয়ার সামনে তারা। মিশন প্রতিশোধের। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফিটা জিততে চায় তারা।

আসরের প্রথম ম্যাচেই চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু। পরের ম্যাচে আফগানিস্তানকেও ৮ উইকেটে উড়িয়ে দেয় রোহিত শর্মার দল। যে ম্যাচ নিয়ে সবার মাঝে উত্তেজনা তুঙ্গে ছিল সেই ম্যাচে আহমেদাবাদে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মারা।

চতুর্থ ম্যাচে পুনেতে বাংলাদেশকেও ৭ উইকেটে হারিয়ে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে ভারত। পঞ্চম ম্যাচে তাদের সামনে টিকতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। ভারত জয় পায় ৪ উইকেটে। ছয় নম্বর ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১০০ রানের পরাজয়ের স্বাদ দেয় তারা। সপ্তম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩০২ রানের বিশাল ব্যবধানে। পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও জয়টা আসে ২৪৩ রানে।

নিজেদের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে হারিয়ে টেবিল টপার হিসেবে সেমিফাইনালে চার নম্বর দল নিউ নিউজিল্যান্ডকে পায় ভারত। জয়ের ধারা বজায় রেখে শেষ চারেও দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মারা। মুম্বাইয়ে কিউইদের ৭০ রানে হারিয়ে পৌঁছে যান স্বপ্নের ফাইনালে।

মঞ্চ প্রস্তুত, প্রস্তুত গোটা বিশ্ব। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা আহমেদাবাদে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে কে ভারত, নাকি ভারতের নীল রংকে বিষাদের রংয়ে পরিণত করে অস্ট্রেলিয়া জিতবে তাদের ষষ্ঠ শিরোপা।

Link copied!