• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মাঠে রিজওয়ানের নামাজ আদায় নিয়ে অভিযোগ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৩, ০৩:১০ পিএম
মাঠে রিজওয়ানের নামাজ আদায় নিয়ে অভিযোগ
পাকিস্তান উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ছবি: সংগৃহীত

খেলার মাঠে নামাজের ওয়াক্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে মাঠেই নামাজ আদায় করা পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্য নতুন কিছু নয়। তবে এবার ম্যাচ চলাকালে মাঠে নামাজ আদায় করার কারণে পাকিস্তান উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে শাস্তির দাবি করেছেন ভারতীয় আলোচিত আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে রিজওয়ানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার অনুরোধ করেছেন এই আইনজীবি।

এই বিনীত জিন্দাল এর আগে পাকিস্তানি উপস্থাপক জয়নাব আব্বাসের বিরুদ্ধে ‘হিন্দু-বিরোধী’ বক্তব্যের জন্য অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যার ফলে সেই উপস্থাপিকা বিশ্বকাপ চলাকালেই ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য হন। রিজওয়ানের বিরুদ্ধে যে শাস্তির দাবি করা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে এই ব্যাটার বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। আবার অফিসিয়ালি কোনো মন্তব্য করেনি আইসিসিও।

ঘটনাটির সূত্রপাত ৬ অক্টোবর হায়দরাবাদে পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপের ম্যাচ থেকে। সেদিন হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ইনিংস বিরতিতে মাঠেই নামাজ আদায় করেন রিজওয়ান। তার নামাজরত ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সেটা ভাইরা হয়ে যায়।

রিজওয়ানের বিরুদ্ধে ভারতীয় আইনজীবীর অভিযোগের খবর জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম। জিও সুপার এ অভিযোগের একটি অনুলিপিও প্রকাশ করেছে। জিন্দাল অভিযোগপত্রে লিখেছেন, “এই অভিযোগ পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিরুদ্ধে, যিনি চলতি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তার দলের প্রথম ম্যাচে মাঠেই নামাজ পড়েছেন। মাঠে রিজওয়ানের নামাজ পড়াকে অনেক ভারতীয় নাগরিকের কাছে নিজের ধর্মকে ইচ্ছাকৃতভাবে তুলে ধরার প্রতীকী চিত্র বলেই মনে হয়েছে, যা খেলাধুলার চেতনাবিরোধী।”

অভিযোগনামায় এই আইনজীবী আরও বলেছেন, “এ ধরনের কাজ খেলোয়াড়ের মধ্যে ম্যাচের চেতনাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। ম্যাচ খেলার সময় খেলোয়াড়ের মধ্যে যে আদর্শ কাজ করে, সেটাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। মোহাম্মদ রিজওয়ান ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ধর্মকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, সেটি হলো, মুসলিম হিসেবে তিনি খেলাধুলার চেতনাও পেছনে ফেলেছেন। মাঠে রিজওয়ান নিজের ধর্মকে উপস্থাপন করেছেন এবং সংবাদ সম্মেলনে গাজার মানুষদের জয় উৎসর্গ করাটা তার ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আদর্শের সত্যায়ন।”

দীর্ঘ এই অভিযোগনামায় আরও বলা হয়, “২০২১ সালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে ভারতকে ১০ উইকেটে হারানোর পর মাঠে নামাজ পড়েছিলেন রিজওয়ান। সাবেক পাকিস্তানি বোলার ওয়াকার ইউনিস তখন বলেছিলেন, “রিজওয়ান যেটা করেছে, সেটা সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে। সে মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে হিন্দুদের সামনে নামাজ পড়েছে।” বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সামনে ৩১ বছর বয়সী রিজওয়ান নিজের ধর্মকে উপস্থাপন করার সুযোগ হিসেবে ক্রিকেট ম্যাচকে ব্যবহার করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যাচের মধ্যে মাঠে রিজওয়ানের নামাজ পড়ার প্রশংসাও করেছেন পাকিস্তানিরা।”

জয়নাব আব্বাসের বিরুদ্ধে বিনীত জিন্দালের আদালতে অভিযোগের পর ভারত ছেড়েছিলেন এই ক্রিকেট সঞ্চালক। নিরাপত্তাশঙ্কায় জয়নাব চলে গেছেন এমন আলোচনার মাঝে আইসিসি জানিয়েছিল, তিনি ভারত ছেড়েছেন ব্যক্তিগত কারণে।

পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে ভারত ছাড়ার কারণ জানিয়ে জয়নাব বলেছিলেন, “আমাকে ভারত ছাড়তে বলা হয়নি, ভারত থেকে বেরও করে দেওয়া হয়নি। এমনকি আমার ওপর কোনো নিরাপত্তাহুমকিও ছিল না। তবে আমার পরিবার ও সীমান্তের দুই প্রান্তের বন্ধুবান্ধব আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ও বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে যা ঘটেছে, সেটির ওপর আলোকপাত করার জন্য আমার কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়েছিল।”

জয়নাব ৯ বছর আগে টুইটারে করা এক পোস্টে লিখেছিলেন, “নয়াদিল্লির গন্ধ গোমূত্রের মতো।”

বিনীত জিন্দাল এ নিয়ে আদালতে অভিযোগ করার পর পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে ক্ষমাও চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট দেন জয়নাব। পাকিস্তানি সঞ্চালক লিখেন, “এ ধরনের ভাষা কিংবা বক্তব্যের কোনো জায়গা কোথাও হতে পারে না। সেই পোস্টে যারা আঘাত পেয়েছেন, আমি তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।”

Link copied!