জ্বর বা ব্যথা হলে অনেকেই বিনা দ্বিধায় প্যারাসিটামল ওষুধ সেবন করেন। বাংলাদেশের বাজারে এটি পাওয়া যায় নানান নামে- নাপা, এইস, রেনোভা, রিসেট, ফাস্ট, এটিপি, সিটাম, লংপারা, জি-প্যারাসিটামল, ফিভা ইত্যাদি। নতুন গবেষণা বলছে, গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ সেবন হতে পারে শিশুর জীবনের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকির কারণ।
গবেষণার ফলাফল
সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভকালীন প্যারাসিটামল সেবনের কারণে জন্ম নেওয়া শিশু অটিজম ও এডিএইচডি (অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার)-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আগে প্যারাসিটামলকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হলেও এই গবেষণা তা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক ডা. লেলিন চৌধুরী এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘গর্ভবতী নারীর জন্য প্যারাসিটামল ভয়াবহ বিপদ তৈরি করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একটি ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা এক চামচ সিরাপও খাওয়া উচিত নয়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে জ্বর বা ব্যথা হলেই ওষুধ খেতে শুরু করেন। গর্ভবতী নারীরা যদি একই অভ্যাসে ওষুধ গ্রহণ করেন, তবে তা অনাগত সন্তানের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে।
কেন ঝুঁকি বেশি?
গবেষকরা মনে করছেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের দেহে প্রবেশ করা রাসায়নিক উপাদানগুলো ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে। নিয়মিত বা অতিরিক্ত সেবনের ক্ষেত্রে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ব্যাহত হয়, যা পরবর্তী সময়ে অটিজম বা এডিএইচডির মতো রোগে রূপ নিতে পারে।
করণীয়
গর্ভবতী নারীর জ্বর বা ব্যথা হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পরিবার ও সমাজে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য নীতিনির্ধারকদের উচিত গর্ভাবস্থায় ওষুধ ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় যে কোনো ওষুধ সেবনকে হালকাভাবে নিলে তা শুধু মায়ের নয়, সন্তানের ভবিষ্যতের জন্যও অদৃশ্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।