• ঢাকা
  • শনিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২,
  • ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

আস্থা নেই জানিয়ে শেখ হাসিনার মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন জেডআই খান পান্না


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম
আস্থা নেই জানিয়ে শেখ হাসিনার মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন জেডআই খান পান্না

বিগত সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘আমি একটা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। সেটা হলো, সম্প্রতি আপনারা জানেন, আইসিটিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ডিফেন্ড করার জন্যে আমি আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ চেয়েছিলাম। প্রথমে বলেছিলাম, তাকে ডিফেন্ড করবো। আদালত বললো, আপনি তো পারেন না, কারণ তিনি পলাতক। তখন প্রসিকিউশন বললো, অনলি স্টেট ডিফেন্সের প্রভিশনটা আছে। যেকোনও উপায়ে আমি তাকে ডিফেন্ড করতে চাই। কিন্তু এখন যেটা দেখলাম, শেখ হাসিনারও এই আদালতের প্রতি আস্থা নাই এবং বিশেষ করে আমার বন্ধু সহযোদ্ধা, সহকর্মী এবং রাজনৈতিকভাবে আমরা পরস্পর স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই জড়িত অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে এই আদালত একটি আদালত অবমাননার মামলা আনয়ন করেছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফজলুর রহমানকে আমি ডিফেন্ড করবো। এ কারণে এবং যে আদালতের প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যার আস্থা নেই সে আদালতে আমি তাকে (শেখ হাসিনাকে) ডিফেন্ড করতে পারি না, উচিত না, অনৈতিক। সেই কারণে আমি ফরমালি যদিও আমি এপয়েন্টমেন্ট পাইনি, পেলে পরে তাকে (ট্রাইব্যুনালকে) ফরমালি জানাবো। আর না পেলে পরে এখান থেকে জানিয়ে দিলাম, আমি আদালতে অন্তত বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষে বা তাকে ডিফেন্ড করার জন্য দাঁড়াবো না, যা হওয়ার হবে। দেখা যাবে।’

‘এখন বলতে পারেন, বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা আছে কিনা? এটা জনগণের কাছেই আমি ছেড়ে দিলাম। জনগণ দেখেন কতখানি আস্থাশীল বিচার বিভাগের প্রতি। আর এই বিচারটা আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যার যে বিচারটা হয়েছে এই আইসিটিতে, এটার প্রতি আন্তর্জাতিকভাবে কিন্তু যারা গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী শাসনের এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যার বিরোধিতা করেছে তারা সেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং এমনিস্ট ইন্টারন্যাশনালসহ বহু আন্তর্জাতিক সংগঠনই তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে। আর আদালতে যদি আমি তাকে নির্বিঘ্নে ডিফেন্ড না করতে পারি তাহলে সেখানে আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত হয়ে কোনও লাভ নেই।’

‘আর আরেকটা কথা বলি, যত কিছুই হোক আমি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে ডিফেন্ড করবো এটা তাকেও আমি বলেছি এবং তার পাশে থাকবো। শুধু এইটা নয় সে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনও কথা বলেনি। সে আমার চেয়েও কঠিন অনেকের চেয়েও কঠিন এবং অনমনীয় মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে সে কখনও কোনও আপোষ করে নাই। সেই আপোষহীন নেতা যদিও আরেক দল করে আমি যদিও কোনও দল করি তো তাকে আমি ডিফেন্ড করার জন্যে এগিয়ে যাবো।’

জেড আই খান পান্না অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা ভুল বুঝবেন না। আমি মানুষ সাধারণ মানুষ, আমার সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে কিন্তু আমি বিক্রয়যোগ্য পণ্য না। কোনও ধরনের পণ্য না আমি। আমি যেটা যখন সঠিক মনে করেছি, সেটাই করেছি। একটু স্বাধীনচেতা মানুষ আরকি। যে যাই বলুক অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে গালিগালাজও করেছিল। আমি রাগ করিনি। কারণ তাদের গালিগালাজের ধরণটা পড়েছি। কিন্তু এইভাবে গালিগালাজ করা ঠিক না। যদি শুভাকাঙ্ক্ষী হন ভুল ধরিয়ে দেবেন, বলবেন। গালিগালাজ করা ঠিক না। তাহলে তো বট বাহিনীর সঙ্গে আপনাদের কোনও পার্থক্য রইলো না। আবারও বলছি আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আইনজীবী হবো না।

আরেকটি ঘটনা আজ দেখলাম টেলিভিশনে। রাজউক জমি দিয়েছে, সেটার জন্যে সাইমা ওয়াজেদ পুতুল এবং সজীব ওয়াজেদ জয়কে পানিশমেন্ট দিয়েছে। যারা আবেদনই করে নাই তাদের কীভাবে আপনি সাজা দেবেন? কীভাবে ঠিক আমি বুঝি না। এগুলো আমি যেহেতু দুদকের মামলা চেষ্টা করবো আপিল করার। আমাকে যদি অনুমতি নাও দেওয়া হয় যে করবে তার সঙ্গে থাকবো। লড়াই ছেড়ে যাবো না। একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, এই দেশ পাকিস্তানিদের হাতে যাবে না। এ দেশ মৌলবাদীদের হাতে যাবে না। এ দেশ স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে থাকবে না।
 

Link copied!